দীপক ঘোষ, সন্দীপ সরকার , রুমা পাল, কলকাতা: শহরে হিন্দু মহাসভার ( Hindu Mahasava ) দুর্গাপুজোয়, অবিকল মহাত্মা গাঁধীর মতো দেখতে অসুর ঘিরে, তৈরি হয়েছিল তীব্র বিতর্ক! এবার শহরে, জাতির জনকের বিরোধিতায় সভা করে, ফের বিতর্ক উস্কে দিল সেই সংগঠন। মঙ্গলবার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে, রানুছায়া মঞ্চে, এই সভা করে হিন্দু মহাসভা। দাবি উঠল, গাঁধীজি ( Mahatma Gandhi ) নয়, জাতির জনক ঘোষণা করতে হবে নেতাজিকে ।




সভার অনুমতি কীভাবে দিল প্রশাসন?  


কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে হওয়া এই অনুষ্ঠানে দাবি তোলা হয় গাঁধীর পরিবর্তে জাতির জনক ঘোষণা করতে হবে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে। নোটেও গাঁধীর পরিবর্তে ব্যবহার করতে হবে নেতাজির ( Netaji Subhas Chandra Bose ) ছবি । 


১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর, আম্বালা কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে গাঁধীজির হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে (Nathuram Godse) ফাঁসি দেওয়া হয়।গাঁধীজির বিরোধিতায় সভার জন্য গডসের মৃত্যুদিনকেই বেছে নেয় হিন্দু মহাসভা! কিন্তু, বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, এমন সভার অনুমতি কীভাবে দিল প্রশাসন?  

'গডসের সমর্থনে কিছু করছি না'
হিন্দু মহাসভার কার্যকরী সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী এদিন বলেন, ' আমরা গডসের সমর্থনে কিছু করছি না। আমরা গাঁধীজির বিরুদ্ধে সভা করছি। পুলিশ আমাদের অনুমতি দিয়েছে। তাই করেছি। পুলিশও তো চায় সত্য সামনে আসুক'


TMC র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ' গণতান্ত্রিক দেশ। ওরা সভা করবে অনুমতি চেয়েছে, পুলিশ দিয়েছে। পুলিশ কী করে জানবে ওরা গাঁধীজির বিরোধিতা করবে? অনুমতি না দিলেও বলবে যে দিল না। ওরা তো গডসেকে পুজো করে।' 


কসবায় হিন্দু মহাসভার দুর্গাপুজোয়, অবিকল গাঁধীজির মতো দেখতে অসুরের মূর্তির ছবি সামনে আসার পর সর্বস্তরে নিন্দার ঝড় উঠেছিল।  তারপর চুল ও গোঁফ লাগিয়ে, অসুরের চেহারা পাল্টে দেওয়া হয়। কিন্তু, প্রশাসন এনিয়ে কেন ব্যবস্থা নিল না, সেই প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহলে। এবার সেই হিন্দু মহাসভাই, কলকাতায়, খোলাখুলি গাঁধীজির বিরোধিতায় সভা করার পর, আবার প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।


এনিয়ে সরকারের  প্রচ্ছন্ন মদত দেখছে সিপিএম। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ' গাঁধীজির বিরোধিতায় সভা করছে। পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে। তাহলে কি প্রচ্ছন্ন অনুমতি রয়েছে?' 

আরও পড়ুন: 


Gandhi Jayanti 2022: অহিংসার পূজারী, জন্মবার্ষিকীতে মহাত্মাকে শ্রদ্ধার্ঘ, দেশবাসীকে খাদি কিনতে অনুরোধ মোদির


হিন্দু মহাসভা বরাবরই গাঁধীজির হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে দেশপ্রেমী হিসেবে তুলে ধরে। কখনও গাঁধীজির মৃত্যুদিবসে তাঁর অবয়বের দিকে গুলি চালিয়ে, কখনও নাথুরাম গডসের ফাঁসির দিনকে বলিদান দিবস হিসেবে পালন করে বারবার বিতর্ক তৈরি করেছে তারা।