পুরশুড়া: হুগলি জুড়ে তৃণমূলের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্যায়ের (Santanu banerjee) রাজপাট দেখে চক্ষু চড়কগাছ সকলের (SSC Case)। হুগলিতে তৃণমূল যুব কংগ্রেস নেতা কুন্তল ঘোষের কীর্তিও কম নয়। হুগলি জেলায় দুর্নীতি চক্রে এ বার আরও এক তৃণমূল নেতার নাম সামনে এল। তিনি হলেন হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা-সংস্কৃতি ও ক্রীড়া স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ গোপাল রায়। অভিযোগ, গোপালকে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে অনেকের চাকরি গিয়েছে আদালতের নির্দেশে (Hooghly News)।


চাকরির জন্য গোপালকে কয়েক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ


চাকরির জন্য গোপালকে কয়েক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি চাকরিহারাদের। আদালতের নির্দেশে স্কুলে গ্রুপ ডি বিভাগে চাকরি গিয়েছে ১ হাজার ৯১১ জনের। চাকরিহারাদের মধ্যে রয়েছেন পুরশুড়ার রসিকচক গ্রামের বাসিন্দা কৌশিক মণ্ডলও। মুক্তারপুর হাইস্কুলের কর্মী ছিলেন তিনি। হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে তাঁর। চাকরিহারাদের তালিকায় ৭৫ নম্বরে নাম রয়েছে কৌশিকের।


কৌশিকের ভাতৃবধূ রিমা পোরেল মণ্ডল এবিপি আনন্দকে বলেন, “টাকা দিয়েই চাকরি হয়েছিল। আমার জানা সাত-আট জন রয়েছেন। প্রায় ৬ লক্ষ করে টাকা দেওয়া হয়েছিল।” কৌশিকের গ্রামেই থাকেন অসীম মণ্ডল। তিনিও গ্রুপ ডি-র চাকরি হারিয়েছেন। চাকরিহারাদের তালিকায় ২০ নম্বরে নাম রয়েছে তাঁর। 


আরও পড়ুন: Byron Biswas: জয়ের ২০ দিন পর কাটল জট, বিধায়ক হিসেবে শপথ নিলেন বায়রন বিশ্বাস


অসীম প্রায় ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে চাকরি পান বলে জানা গিয়েছে। যদিে অসীমের মা মায়ারানি মণ্ডল বলেন, “চাকরি চলে গিয়েছে। তবে টাকা দেয়নি। টাকার কথা বলতে পারব না।” তাঁদের এক প্রতিবেশী জানান, জমি বিক্রি করে অসীমের চাকরির জন্য টাকা জোগাড় করে তাঁর পরিবার। তাঁর ছেলেকেও একই পথ ধরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। 


যদিও তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতা গোপাল। তিনি বলেন, "পুরোটাই চক্রান্ত। আমি চুরি করে থাকলে, জেল খাটব, ইডি-সিবিআইয়ের কাছে যাব। আমি টাকা নিইনি। ২০১৮ সালে আমি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। জানিয়েছিলাম, এখানে একটা চক্র চলছে। এর বিরুদ্ধে আমি লড়াই করেছিলাম।"


গোপালের বিরুদ্ধে এ বার কোনও পদক্ষেপ করা হয় কিনা দেখার


একাধিক সংস্থায় শান্তনুর স্ত্রী প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে ডিরেক্টর হিসেবে নাম রয়েছে পুরশুড়ার তৃণমূল কর্মী রাকেশ মণ্ডলের। তৃণমূল কর্মী রাকেশ ধনেখালি ব্লক অফিসের যুব দফতরের ঠিকা কর্মী। পাশাপাশি বালি ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। শান্তনুকে নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, "শান্তনুকে চিনতাম। রিসর্ট জানতাম। তবে এত সম্পত্তি জানতাম না। দু'টো কাগজে সই করায় কয়েক দিনের ব্যবধানে। সেই কাগজের এক দিকে প্রিয়ঙ্কা এবং অন্য দিকে আমাকে সই করায়। তখন জানতাম না। এখন বুঝতে পারছি।" শান্তনুকে ইতিমধ্যেই দল থেকে বহিষ্কার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে জেলা কর্মাধ্যক্ষ পদে এখনও রয়েছেন। গোপালের বিরুদ্ধে এ বার কোনও পদক্ষেপ করা হয় কিনা, তা-ই দেখার।