সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলি : পরনে পুলিশের উর্দি! কাঁধে তিনটে তারা। ইউনিফর্মে হুবহু রাজ্য পুলিশের লোগো। রয়েছে নিজের নামের নেমপ্লেটও। তাতেও রাজ্য সরকারের স্টিকার সাটানো।
মাথায় নীল বাতি। কিন্তু পুরোটাই মিথ্যা।
ভুয়ো IAS। দেবাঞ্জন দেব। ভুয়ো IPS রাজর্ষি ভট্টাচার্য। ভুয়ো সিবিআই অফিসার শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ভুয়ো সিআইডি রাধারানী বিশ্বাসের পর এবার হুগলির চন্দননগরে ধরা পড়লেন ভুয়ো ডেপুটি পুলিশ সুপার। গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকা আরও দু-জন। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি গাড়িও। ইনি হলেন সেই ভুয়ো DSP। চন্দননগরের বক্সী গলির বাসিন্দা, সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী।
পুলিশ সূত্রে দাবি, বুধবার রাতে চন্দননগরের রানিঘাট স্ট্র্যান্ড রোডে, বাজেয়াপ্ত হওয়া স্করপিও গাড়ির মধ্যে ছিলেন ভুয়ো DSP সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। গাড়িটি দেখা মাত্রই সন্দেহ হয় টহলদারী পুলিশের। এভাবে সরকারি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, থানায় খবর দেন তাঁরা। এরপর আরও পুলিশ এসে গাড়িটি সার্চ করতে যান।
অভিযোগ, তখনই দেখা যায় গাড়ির মধ্যে দু-জনের সঙ্গে মদ্যপান করছিলেন সিদ্ধার্থ। পুলিশি জেরায় নিজেকে গ্র্যাজুয়েট বলে দাবি করেছেন ভুয়ো পুলিশ অফিসার। আগে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের চাকরি করতেন।
পুলিশি জেরার মুখেই ভেঙে পড়েন ধৃত। বৃহস্পতিবার ধৃত ডিএসপি-সহ তিনজনকে চন্দননগর আদালতে তোলা হয়। ছেলে ধরা পড়েছে শুনেই থানায় ছুটে আসেন মা। কিন্তু ছেলের সম্পর্কে মুখ খুলতে চাননি তিনিও। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আগে বর্ধমানে সরকারি গাড়ির চালক ছিলেন ধৃত সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। তখন থেকেই সরকারি কার্যকলাপের আদপ কায়দাগুলি জানা হয়ে গিয়েছিল তাঁর। ব্যারাকপুর থেকে তিনি পুলিশের পোশাক কিনেছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
তবে ডিএসপি-র পরিচয় দিয়ে তিনি কারও সঙ্গে কোনও প্রতারণা করেছেন কিনা, ধৃতকে জেরা করে তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
গত ৭ সেপ্টেম্বর ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেবকে জেলে গিয়ে জেরা করার অনুমতি পেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। দেবাঞ্জন দেব পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। স্পেশাল কোর্টে দেবাঞ্জনকে জেরার অনুমতি চেয়ে ইডি আবেদন করে। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। ইডি স্পেশাল কোর্ট জানিয়েছে, যখনই দেবাঞ্জন জেল হেফাজতে যাবেন, তখনই ইডির অফিসাররা তাঁকে জেলে গিয়ে জেরা করতে পারবে। এই নির্দেশ প্রতিটি জেল সুপারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।