সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি:  ঘর আটকে বসে থাকলেও, ভাড়া গোনার নাম করছেন না। উল্টে গায়ের জোরে ব্যবসা খুলে বসেছেন ভাড়াটিয়া। উঠে যেতে বললে উল্টে হুমকি দিচ্ছেন। ভয় দেখাচ্ছেন কোর্ট-কাছারির। সেই নিয়ে দিনের পর দিন অশান্তি। তার জেরে বাড়ির মালিক আত্মহত্যাই করে বসলেন বলে অভিযোগ। ট্রেন লাইনে ঝাঁপিয়ে পড়ে তিনি আত্নঘাতী (Landlord Commits Suicide) হন বলে জানা গিয়েছে। অভিযুক্ত ভাড়াটিয়ার (Accusation Against Tenant)কড়া শাস্তির দাবি তুলছেন মৃতের পরিবারের লোকজন।


কোন্নগরে ভাড়াটের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে আত্মঘাতী বাড়িমালিক


হুগলির (Hooghly News) কোন্নগর (Konnagar News) পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। সেখানকার ব্যানার্জি লেনের বাসিন্দা ছিলেন সুদীপ বসু। ৫০ বছর বয়সি সুদীপবাবুই আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে কোন্নগর রেল লাইন থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তের পর বুধবার সকালে দেহ আনা হয় বাড়িতে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া গোটা এলাকায়। অভিযুক্ত ভাড়াটিয়ার উপদ্রবে, মানসিক অবসাদ থেকেই তিনি এমন পদক্ষেপ করেছেন বলে দাবি সকলের।


আরও পড়ুন: Sisir Adhikari: শিশির অধিকারীকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ মন্ত্রী অখিল গিরির । Bangla News


মৃতের পরিবার জানিয়েছে, বাড়ির একতলায় গত তিন বছর ধরে ভাড়া রয়েছেন বুবুন নাগ নামের এক যুবক। সুদীপবাবুর স্ত্রী বীণা বসু জানিয়েছেন, চলতি মাসের ফেব্রুয়ারি মাসেই ভাড়ার চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরেও গর ছাড়ছেন না বুবুন। গত ১০ মাস ধরে ঘরভাড়া দেননি তিনি। উঠে যাওয়ার কথা বললেই নানা ভাবে হুমকি দেন। তাঁদের ভুয়ো মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় বলে দাবি বীণাদেবীর। এমনকি বুবুন তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।


মানসিক অবসাদ থেকেই আত্মহত্যা!


বীণাদেবীর দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে এই নিয়ে অশান্তি চলছিল। তাতে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন সুদীপবাবু। সেই থেকেই এমন পদক্ষেপ করেছেন। সুদীপবাবুর দদি মৌসুমি মিত্র জানিয়েছেন, বুবুনের উপদ্রবে প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছইলেন সুদীপবাবু। বাড়ি বিক্রির কথা চলছিল। কিন্তু ঘর ছাড়তে চাইছিলেন না বুবুন। বরং সিকিওরিটি এজেন্সি খুলে বসেন। কিছু বললেই ভয় দেখাতেন সুদীপবাবুকে। উপায়ান্ত না দেখেই এমন পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছেন সুদীপবাবু। অভিযুক্ত ভাড়াটিয়ার কঠোর শাস্তি চেয়েছেন তিনি।


কোন্নগর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর তন্ময় দেব বলেন, “বুবুন নাগ ঠগবাজ, মামলাবাজ লোক। সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করিয়ে পয়সা দেন না। কিছু বললেই পুলিশে অভিযোগ করিয়ে জেল খাটান। ওঁকে কোন্নগরের সবাই চেনেন। গতকালও ওই বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল। তার পরেই শুনলাম এই ঘটনা। পুলিশের ভয় দেখিয়ে লোক ঠকানো বুবুনের কাজ। পুলিশকে , এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে শাস্তি দিতে।” মঙ্গলবার সুদীপবাবুর দেহ উদ্ধারের পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত বুবুন। সুদীপবাবুর পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।