কোন্নগর: ভাঙড়, সাইথিঁয়া, মল্লারপুরের পর, হুগলির কোন্নগর। চলতি মাসে ফের খুন হলেন তৃণমূল নেতা। এবার কোন্নগরে নিজের গ্যাসের অফিসের সামনে কুপিয়ে খুন করা হল কানাইপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য পিনটু চক্রবর্তী ওরফে মুন্নাকে। গোটা ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল জেলার রাজনীতিতে। চলতি মাসে ৫ জেলায় তৃণমূলের ৭ জন নেতা, কর্মী খুন হয়েছেন। 

১০ জুলাই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে গুলি করে, কুপিয়ে খুন করা হয় চালতাবেড়িয়ার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি রাজ্জাক খানকে। একই দিনে মালদার ইংরেজবাজারের লক্ষ্মীপুরে জন্মদিনের পার্টিতে স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে খুন করা হয় আবুল কালাম আজাদকে। গত ১৩ জুলাই বীরভূমের সাঁইথিয়ায় গুলি করে খুন করা হয় শ্রীনিধিপুরের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি পীযূষ ঘোষকে। ১৯ জুলাই মল্লারপুরে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতা ও ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ বায়তুল্লা শেখের। ২৩ জুলাই মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে কুপিয়ে খুন করা হয় তৃণমূল কর্মী ষষ্ঠী ঘোষকে। লোহার রড দিয়ে মেরে, শাবল দিয়ে কোপানোয় গত ২৫ জুলাই মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী পতিত পালের। ৩০ জুলাই হুগলির কোন্নগরে কুপিয়ে খুন করা হয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য পিন্টু চক্রবর্তীকে।

এদিকে, গত এক সপ্তাহে পরপর তৃণমূল কর্মী খুনের খবর। সাঁইথিয়া, মল্লারপুরে তৃণমূল কর্মী, নেতা খুনের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। বোমার আঘাতে প্রাণ গিয়েছে তৃণমূল নেতা তথা ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ বায়তুল্লা শেখের। চায়ের দোকান থেকে ফেরার সময় তাঁকে লক্ষ্য় করে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, এক বছর আগে থেকেই তাঁকে খুনের ষড়যন্ত্র চলছিল। আগে সেই চক্রান্তের কথা জেনে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে এবার আর শেষরক্ষা হল না। শনিবার তিন তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে মল্লারপুরের বিশিয়া গ্রাম থেকে ফিরছিলেন বায়তুল্লা। সেই সময় তাঁদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। বায়তুল্লা-সহ সকলেই বোমার আঘাতে আহত হন। রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে বায়তুল্লাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। বাকি তিন জন এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

উল্লেখ্য, এমন ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে রাজ্যের শাসকদল। কারণ গত ১০ দিনে তিন জেলায় এই নিয়ে তাদের চার নেতা-কর্মী খুন হলেন। গত ১০ জুলাই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে খুন হন তৃণমূলের রাজ্জাক খান। সেই ঘটনায় যে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়, তাঁদের মধ্যে দু'জন তৃণমূল কর্মী। আবার ওই রাতেই মালদার ইংরেজবাজারে জন্মদিনের পার্টিতে খুন হন তৃণমূল নেতা আবুল কালাম আজাদ। তৃণমূলের এক নেতাই তাঁকে কুপিয়ে খুন করেন বলে অভিযোগ।