সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সোমনাথ মিত্র, হুগলি : ছেলেধরা সন্দেহে হুগলির মির্জাপুরে এক মহিলা সহ ৬ জনকে আটক করে গণপ্রহার গ্রামবাসীদের। জ্বালিয়ে দেওয়া হল সন্দেহভাজনদের গাড়ি, পুলিশকে (Police) লক্ষ্য করে হল ইটবৃষ্টি। হামলার মুখে পাল্টা টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটাল পুলিশ। হামলার ঘটনায় আটক ৫ গ্রামবাসী।
রণক্ষেত্র তারকেশ্বর
ফের সেই সন্দেহের সংক্রমণ! ছেলেধরা সন্দেহে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল হুগলির তারকেশ্বরে। ৬ জনকে আটকে রেখে গণপ্রহার গ্রামবাসীদের। সন্দেহভাজনদের গাড়ি ভাঙচুর, আগুন। অভিযুক্তদের উদ্ধারে গিয়ে হামলার মুখে পড়ল পুলিশ। হল ইটবৃষ্টি। পরিস্থিতি সামাল দিতে চলল টিয়ার গ্যাস। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে তারকেশ্বরের মির্জাপুর এলাকায়।
সন্দেহের বশে গণপ্রহার
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন দুপুরে একটি ম্যাটাডোরে করে গ্রামে ঢোকেন এক মহিলা সহ ৬ জন। ছেলেধরা সন্দেহে শিবতলা এলাকায় তাঁদেরকে আটকে রাখেন গ্রামবাসীরা। শুরু হয় গণপ্রহার। খবর পেয়ে ছুটে আসে পুলিশ। সন্দেহভাজনদের উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে শুরু হয় বচসা, ধাক্কাধাক্কি। অভিযুক্তরা যে গাড়িতে করে এসেছিল, সেই গাড়িটিতে ভাঙচুর চালায় গ্রামবাসীরা। ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন।
পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী
পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। দমকলের একটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গ্রামে পৌঁছয় পুলিশের বিশাল বাহিনী। তারকেশ্বর থানার পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনায় ছয় অভিযুক্ত ও পাঁচ গ্রামবাসীকে আটক করা হয়েছে। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, অভিযুক্তরা কাগজ কুড়োতে গ্রাম গিয়েছিলেন। তবে তাঁরা গাড়ি নিয়ে কেন এলাকায় ঢুকেছিলেন? অভিযুক্তরা ছেলেধরা বা শিশু পাচারের সঙ্গে জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর গ্রামে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ বাহিনী। এক অভিযুক্তকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে মন্দিরে চুরির চেষ্টায় সময় হাতেনাতে পাকড়াও হয় অভিযুক্তরা। হাতেনাতে ধরে ফেলার পরে তাদের গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। জনরোষের হাত থেকে শেষপর্যন্ত ৮ জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। ৬ মহিলা-সহ ওই ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে, কিছুদিন আগে হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় নিখোঁজ নাবালিকার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তুলকালাম বেঁধেছিল। স্থানীয়দের দাবি ছিল, মৃত্যু নিয়ে তাঁরা রাজনীতি চান না।