সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি : আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে নাগরিক সমাজের আন্দোলন চলছে। মেয়েদের রাত দখল থেকে, রাস্তায় মানব-বন্ধন,গানে,গ্রাফিতিতে মনের ক্ষোভ, মুখ ফুটে বেরিয়ে আসছে। এই অবস্থায় এবার উৎসবে ফিরে আসার আহ্বান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 'পুজোতে ফিরে আসুন। উৎসবে ফিরে আসুন' বলে ডাক দিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে আন্দোলনকারীদের একটা বড় অংশও প্রতিবাদে অনড়। সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা ছড়াচ্ছে 'উৎশবে ফিরছি না।'
এই পরিস্থিতিতেই এবার গনেশ পুজোয় গভীর রাতে জোরে গান বাজানোর প্রতিবাদ করার অশ্রাব্য গালিগালাজ শুনতে হল তরুণীকে। অভিযোগ, শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন কুমিরজলা রোডে মাছের আড়তে রাতে গনেশ পুজো উপলক্ষে জলসা চলছিল। সেই সময়ই এলাকারই এক মহিলা রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বৈদ্যবাটি থেকে ফিরছিলেন। সেদিন আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে ফিরছিলেন তিনি। অভিযোগ, ফেরার সময় তিনি দেখেন শ্রীরামপুর স্টেশনের কাছে মাছের আড়তের পাশে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান চলছে।
অভিযোগ, ওই মহিলা প্রথমে মাইকের শব্দ কমাতে অনুরোধ করেন। তাতে কেউই কর্ণপাত করেননি। তাঁর কথা কেউ না শোনায় যে শিল্পী গান করছিলেন তাঁর থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করার কথা বলতে গেলে ওই মহিলাকে ঘিরে ধরে কয়েকজন।অভিযোগ, তাঁর গায়ে হাত দেওয়া থেকে ধাক্কা মারা হয় । সেই সঙ্গে ওই মহিলাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শ্লীলতাহানি করা হয়।
ঘটনার সময় শ্রীরামপুর-উত্তর পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও শ্রীরামপুর মৎস্য আড়তদার উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক ইন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন মহিলা। রাতেই শ্রীরামপুর থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান মহিলা।
তিনি বলেন, 'আমি পেশায় একজন আইনজীবী। আজ শ্রীরামপুর থানার অভিযোগ দায়ের করলাম।'
শ্রীরামপুর মৎস্য আড়তদার উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক ইন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানান, মিথ্যা অভিযোগ করছেন উনি। প্রতি বছর মাছের আড়তে গনেশ পুজো হয়। পুলিশের অনুমতি নিয়ে নানা অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠান হচ্ছিল ঠিকই , তবে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি আরও বলেন,' যিনি এই অভিযোগ করছেন, তিনি আমার মেয়ের মত। আমরা আরতের সবাই ওঁকে বোন মনে করি। ওঁর হয়তো মনে হয়েছে যে এখন একটা শোকের আবহ চলছে। আমরাও সেটা মনে করি। তাই অনুষ্ঠান শুরুর আগে আমরা ঘোষণাও করেছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষও করেছি। কেন এই অভিযোগ করছে আমার জানা নেই।'
অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। এফআইআর করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।