সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: প্রতিবছর বর্ষায় বা তার আগে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যুর খবর মেলে এই রাজ্যের বিভিন্ন কোণায়। তার মধ্যে একাধিক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকে খোলা ল্যাম্পপোস্ট। কলকাতা থেকে হাওড়া কিংবা হুগলি, একাধিক জায়গায় বেহাল অবস্থায় রয়েছে বৈদ্যুতিক বাতিস্তম্ভ। তার খোলা থাকায় বৃষ্টির সময় অথবা জল জমে প্রবল বিপদ তৈরি হয়। অসতর্কতায় বা অসাবধানতায় সেই ল্যাম্পপোস্ট কেড়ে নেয় প্রাণ।
সম্প্রতি কলকাতার হরিদেবপুরে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তার আগে হাওড়ায়, দমদমে এমন ঘটনা ঘটেছে। গত বছরই রাজভবনের সামনেও একই কারণে প্রাণ গিয়েছে একজনের। কিন্তু তারপরেও হুঁশ ন। শ্রীরামপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে খোলা রয়েছে বিদ্যুতের জয়েন্ট বক্স। বিপজ্জনকভাবে খোলা রয়েছে তার। হুগলির শ্রীরামপুর শহর জুড়ে দেখা গিয়েছে এমনই সব মরণফাঁদ।
কোথায় কোথায় এমন অবস্থা:
শ্রীরামপুরের বটতলা পাঁচ মাথার মোড়, এখানেই ট্রাফিক সিগন্যালের পোস্টের জয়েন্ট বক্স খোলা। সেখান থেকে বিপজ্জনকভাবে বেরিয়ে রয়েছে তার। এই এলাকায় ছ’টি স্কুল রয়েছে। ফলে সারাক্ষণই পড়ুয়া, অভিভাবক, শিক্ষকদের যাতায়াত চলছে। ওই এলাকায় এমন পরিস্থিতি হওয়ায় বাড়ছে আতঙ্ক। শ্রীরামপুরের বাসিন্দা সাবির আলি বলেন, 'বিভিন্ন জায়গাতেই তার খোলা। প্রশাসনের নজর নেই। প্রাণ গেলে তবে নজরদারি হয়।' শুধু এই এলাকাই নয়, বটতলা থেকে ওয়ালস হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তায় এই ত্রিফলা স্ট্যান্ডেরও জয়েন্ট বক্স খোলা। বিভিন্ন জায়গায় বেরিয়ে থাকা বিদ্যুতের তারে টেপ জড়ানো রয়েছে। এমনকি একই পরিস্থিতি শ্রীরামপুর থানার রাস্তাতেও। এই এলাকাতেই রয়েছে একটি নার্সিংহোমও। কোথাও কোথাও মাথার উপর ঝুলে পড়েছে বিদ্যুতের তার। ট্রাফিক কিয়স্কের আশেপাশেও একই ছবি। বারবার অভিযোগের পরেও কাজ হচ্ছে না বলে দাবি স্থানীয়দের।
রাজনৈতিক তরজা:
সমস্যা নিয়ে শুরু হয়ে দোষারোপের পালা। কাজ না হওয়ায় তৃণমূল পরিচালিত পুরসভাকে নিশানা করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ, 'শুধু কাটমানির জন্য সৌন্দর্যায়ন। পরে আর খেয়াল রাখে না। এগুলোয় যে হাত দেবে, চিরতরে ঘুমিয়ে পড়বে।' পাল্টা শ্রীরামপুর পুরসভার তৃণমূল নেতা ও চেয়ারম্যান গিরিধারী সাহা বলেন, 'আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব ঠিক করে দেব। কাজ করলে ত্রুটি থাকবেই। সেটা কত তাড়াতাড়ি সমাধান করা হবে দেখছি।'
নজরদারির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে।
আরও পড়ুন: 'পরেশ অধিকারীর জন্য বাইরে বেরোনো যায় না', খেদ তৃণমূল নেতার