সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: বাচ্চারাই আগামীর পথপ্রদর্শক। কোনও বাচ্চার যেন কোনও ক্ষতি না হয়। তাহলে কারও মুণ্ড থাকবে না। গঙ্গার ভাঙনে বিপন্ন হুগলির স্কুলের মামলায় মন্তব্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। বুধবারের মধ্যে অস্থায়ী জায়গায় ক্লাস শুরু করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
নতুন ভবন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত, অস্থায়ী জায়গাতেই হবে পড়ুয়াদের ক্লাস। একটা বাচ্চারও যাতে কোনও ক্ষতি না হয়। নদীর গ্রাসে প্রাথমিক স্কুল সংক্রান্ত মামলায় বুধবার এভাবেই প্রশাসনকে সতর্ক করলেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়।
ভাঙনের জেরে হুগলির জিরাটের চরখয়রামারি প্রাইমারি স্কুলের একেবারে দোরগোরায় এসে গিয়েছে গঙ্গা। সংবাদমাধ্যমে স্কুলের এই ভয়ঙ্কর অবস্থা জানার পর স্বতঃপ্রণোদিত মামলার নির্দেশ দেন বিচারপতি। এদিন সেই মামলারই শুনানি ছিল। আদালতের নির্দেশ মতো এদিন হাজির হয়েছিলেন জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান শিল্পা নন্দী, স্কুল পরিদর্শক তপনকুমার বসু ও স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সুচন্দ্রা রায়-সহ অন্যরা। এদিন প্রশাসনের তরফে আদালতে বলা হয়, যতটা দেখানো হয়েছে স্কুলের অবস্থা ততটাও খারাপ নয়। যেদিকে গঙ্গার ভাঙন হচ্ছে সেদিকে স্কুলের কোনও কাজই হয় না। ওটা স্কুলের পিছনের দিক।
আরও জানানো হয়, ইতিমধ্যে স্কুল প্রকল্পে ১১ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা অনুমোদন হয়েছে। নতুন ভবন তৈরির জন্য জায়গাও দেখা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। এরপর বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, এতদিন কি স্কুল বন্ধ থাকবে? এরপর বিচারপতি স্কুল সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য নিয়ে বিচারপতি নির্দেশ দেন, স্কুল ওখানে চলতে দেওয়া যাবে না। দরকারে চার চালা করে ক্লাস করান। পাশাপাশি তিনি বলেন, নদীর পাড়ে স্কুলের পুরনো ভবনে মিড ডে মিলের রান্না হবে।
রান্না করা খাবার পৌঁছে দিতে হবে পড়ুয়াদের অস্থায়ী ক্লাসে। একই সঙ্গে নতুন স্কুল বানানোর কাজও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাচ্চাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা দেখতে হবে।একইসঙ্গে বিচারপতি সতর্ক করে বলেন, বাচ্চারাই আগামীর পথপ্রদর্শক। খুব কেয়ারফুল থাকুন। একটা বাচ্চারও যাতে কোনও ক্ষতি না হয়। তাহলে কারও মুণ্ড থাকবে না। দেশ স্বাধীন হওয়ার ২ বছর পর, ১৯৪৯ সালে তৈরি হয়েছিল চরখয়রামারি প্রাথমিক স্কুল। বর্তমানে স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৫০ জন।