সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: হুগলির কুখ্যাত দুষ্কৃতী টোটোন বিশ্বাসকে কলকাতার এসএসকেএম থেকে চুঁচুড়া আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে এসকর্ট করে ছিল টোটোনের সাগরেদরা। সেই সময় ডানকুনি থেকে দিল্লি রোডে পুলিশের গাড়ির পিছু নেওয়া কয়েকটি চার চাকা ও বাইক আটকায় পুলিশ। বাঙ্গিহাটির কাছে তাদের কাছ থেকে ১২ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ। মোট ৩৯ জনকে গ্রেফতার করে ডানকুনি থানার পুলিশ। আজ ধৃতদের শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন, পুলিশের কাজে বাঁধা দেওয়ার মামলা রুজু করা হয়েছে।
কী বলছে টোটোন বাহিনীর ছেলেরা?
ধরা পড়ার পর টোটোন বাহিনীর ছেলেদের বক্তব্য, ''পুলিশ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তাই দাদাকে নিরাপত্তা দিতে এসকর্ট করছিলাম আমরা।'' উল্লেখ্য, গত ৬ই অগাস্ট চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট করাতে নিয়ে যাওয়া হয় টোটোনকে। সেখানে তাকে গুলি মারে বাবু পালের দলবল। টোটোনের পেটের বাঁ দিকে গুলি লাগে। এরপরই টোটোন বাহিনীর ছেলেরা সবাই উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
ইমামবাড়া হাসপাতালে অস্ত্রপ্রচারের পর কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল টোটোনের। গতকাল সেখান থেকেই তাকে চুঁচুড়া আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। টোটোনকে চুঁচুড়া আদালত ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলে পাঠানো হয়েছে গতকালই। আজ টোটোন বাহিনীর সদস্যদের শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে তাদের ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
ভুয়ো পুলিশের পরিচয় দিয়ে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব
২ দিন আগেই বাগনানের একটি খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। যার জন্য মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের। ভুয়ো পুলিশের দৌরাত্ম্য। বাগনানের বরুণাদয় ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে পুলিশ পরিচয় দিয়ে লুঠপাঠের চেষ্টা। বাধা দেওয়ার ফলে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। আর এই ঘটনার ফলে মারা যান এক যুবক।
ঠিক কী হয়েছিল?
পুলিশ সূত্রে খবর, সেই জাতীয় সড়কে দীর্ঘদিন ধরেই পুলিশের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় লুঠপাঠের চেষ্টা করল একটি চক্র। জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম সুজয় দাস। তারকেশ্বরের শ্যামপুরের বাসিন্দা তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনার দিন রাত ৮ টা নাগাদ তারকেশ্বর থেকে ৭ জন একটি ১০৭ গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন দিঘার উদ্দেশে। গাড়ি চালাচ্ছিলেন সুজয়। রাত ১ টা নাগাদ বাগনান থানার বরুন্দায় ১৬ নং জাতীয় সড়কে পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের গাড়ি থামায় দুটি বাইকে আসা দুই দুষ্কৃতী। তারা গাড়ির পেপার দেখতে চাইলে, তাদের পেপার দেখান সুজয়। অভিযোগ তারপরেই ৫০০০ টাকা দাবি করে এই দুই দুষ্কৃতী।
এরপরই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে হাতাহাতি বেঁধে যায়। ব্যাপক মারধর চলে। আহত ৭ জনকে নিয়ে যাওয়া হয় বাগনান হাসপাতালে। সুজয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে স্থানান্তরিত হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।