সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: স্কুলের পোশাক বিতর্কে অভিভাবককে ধমক ও সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের (Locket Chatterjee) বিরুদ্ধে তৃণমূল (TMC) বিধায়ক অসিত মজুমদারের (Asit Mazumdar) কুরুচিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে বিজেপির (BJP) থানা ঘেরাও কর্মসূচি। চুঁচুড়া থানার সামনে পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তি। কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন বলে গেরুয়া শিবিরের দাবি। এদিন মিছিল করে গিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপির মহিলা মোর্চা ও যুব মোর্চার কর্মীরা। অন্যদিকে, নীল-সাদা স্কুল ইউনিফর্ম বিতর্কে অভিভাবককে ধমক দেওয়ার পর ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামলেন অসিত মজুমদার। এদিন ব্যান্ডেলের ওই সরকারি স্কুলে গিয়ে পড়ুয়া ও শিক্ষিকাদের সঙ্গে দেখা করেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক। 


ঠিক কী হয়েছিল? গত ১৫ অক্টোবর, স্কুলের পোশাকের মান নিয়ে প্রশ্ন শুনে মেজাজ হারান চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। ধমক দিলেন অভিভাবিকাকে। রাজ্য সরকার নিম্নমানের পোশাক দিলে, তা বলার অধিকার সবার আছে। তৃণমূল বিধায়কের আচরণ লজ্জার, কটাক্ষ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। 


ফের বিতর্কে চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক। হুগলি গার্লস স্কুলে এক অভিভাবিকার প্রশ্নে মেজাজ হারালেন অসিত মজুমদার। শনিবার, হুগলি গার্লস স্কুলের পরিচালন সমিতির সঙ্গে অভিভাবকদের মিটিং ডাকা হয়। উপস্থিত ছিলেন স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি, তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়, মুখোমুখি বিধায়ক। সেখানেই এক অভিভাবিকা সরকারের দেওয়া স্কুলের পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই, রেগে আগুন হয়ে ওঠেন তৃণমূল বিধায়ক!


কী বললেন অসিত: চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, সিনেমায় পালিয়ে গেলাম। কোনও লাভ নেই। আমি অনেক কিছু জানি। আমি রাস্তায় ঘুরি। আমাকে ওসব শিখিয়ে লাভ নেই। স্কুলের উন্নয়নের জন্য বলুন। থাকব, কথা বলব, হাজার বার। আর যদি এই সমস্ত করেন, পরেরবার আর ডাকবই না, মিটে গেল। অভিভাবকদের দাবি, স্কুল থেকে নিম্নমানের পোশাক দেওয়া হয়েছে। অভিভাবক জানান, রঙ নিয়ে সমস্যা নেই। গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন। 


কখনও বিরোধীদের লাথি, চড়, ঘুষি, কখনও আক্রমণ। এর আগে অসিত মজুমদার, লকেট প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ও গলার লকেট ছিল। আর আমি চুঁচুড়ায় ওঁকে পায়ের নূপুর করে ছেড়ে দিয়েছি। ও আর কারও গলায় উঠবে না। পায়ের নীচেই থাকবে। বারবার বিতর্কে অসিত মজুমদার।


লকেটের বয়ান: এ প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, খুবই লজ্জার কথা। রাজ্য সরকার নিম্নমানের পোশাক দিচ্ছে, সেটা খারাপ বলার গণতান্ত্রিক অধিকার সবার আছে। মহিলাকে চুপ করানোর জন্য বাজে কথা বলছেন। এই ড্রেস পরে সে সিনেমা দেখতে যায়। এই বিধায়ক ৬ থেকে ৬০ বছরের মহিলাদের সবাইকে বাজে কথা বলে। বাংলার মহিলাদের বিরুদ্ধে বলব এই লোকটার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। এই ধরনের পোশাক ওনাকে উপহার দেওয়া উচিত।


ঘটনায় অসিত মজুমদারের সাফাই, ওই অভিভাবক এসে বলেন রঙ নিয়ে নয় পোশাকের মান নিয়ে বলতে চেয়েছিলেন।পোশাকের কোয়ালিটির ব্যাপারে টেন্ডার ডাকে সরকার, সেই অনুযায়ী মাল আসে। কিন্তু সেই কোয়ালিটিটা আমাদের দেখে নেওয়া উচিত ছিল। আমি এটার স্পেসিফিক অ্যাকশন নেব। এবং ডিএমকে বলব যে এজেন্সি পোশাকের বরাদ্দ পেয়েছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। কেউ নাটক করলে, ইচ্ছে করে কাঁদলে কিছু করার নেই। সবমিলিয়ে, তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের পিছু ছাড়ছে না বিতর্ক।