সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি : হরিপালের শেখ মহম্মদ ওলিউল্লা, শ্রীমন্ত সিং ডানকুনির আউজুল মল্লিক। তিনজনেরই নিকট আত্মীয় ভর্তি চন্দননগর হাসপাতালে।অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ের সামনে আরও অনেকের সঙ্গে তারা রাত জাগছিলেন তাঁরা। উৎকণ্ঠায় ছিলেন প্রত্যেকেই। এরই মধ্যে এক মধ্য বয়সী ব্যক্তি এসে তাঁদের সঙ্গে ভাব জমান।
আলাপ , কথাবার্তা থেকে ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার প্রস্তাব। গরমের দিনে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেননি কেউই। তিনজনেই অল্প করে পানীয়তে চুমুক দেন। কয়েক মুহূর্তে প্রায় অচেতন হয়ে পড়েন তিনজনই। সকালে ঘুম ভাঙলে দেখেন মোবাইল থেকে টাকাকড়ি, সব গায়েব।
কিছুক্ষণ পর প্রকৃতির ডাকে ওলিউল্লা শৌচালয়ে যান। কিন্তু শরীর - মাথা সব কেমন ঝিমঝিম করছিল। সেখানে গিয়েই মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। মাথা ফেটে যায় তাঁর। পরে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয় ওই হাসপাতালেই। মাদকের প্রভাব এতটাই উঠে দাঁড়াতে পারছিলেন না তিনজনই।
রোজার সময় এমনিই সারাদিন উপোস যায়, তার উপর রোগীর জন্য রাত জাগার ক্লান্তি। তাই হয়ত পানীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে পারেননি, আর তা খেয়েই হল বিপত্তি। জানালেন ওলিউল্লা। মহম্মদ ওলিউল্লা বলেন, ' আমি রোজা করি। গত রাতে একজন বলল একটু জুস খান। খাওয়ার পর আর হুঁশ ছিলনা। সকালে উঠে মুখ ধুতে গিয়ে পড়ে যাই। মাথা ফেটে যায়। হাসপাতালে অনেক ধরনের মানুষ আসেন। কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবা দরকার।' হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের পরিজনদের মধ্যে অনেকেরই অভিযোগ, এর আগেও এধরনের কেপমারির ঘটনা ঘটেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা থাকলেও অ্যানেক্স বিল্ডিং নতুন হওয়ায় সেখানে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়নি। হাসপাতালে প্রবেশ দ্বারেও নেই সিসি ক্যামেরা। নিরাপত্তারক্ষীও গরহাজির। তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটার সুযোগ তৈরি হচ্ছে, অভিযোগ রোগীর পরিজনদের। হাসপাতালের মধ্যে এমন ঘটনা কারা ঘটাল, তাই নিয়ে চিন্তা বাড়ছে পরিজনদের। হাসপাতালে ভর্তি থাকা আত্মীয়দের নিয়ে দুশ্চিন্তায় অনেক সময়ই মাথা কাজ করে না। পাশের মানুষটার উপর বিশ্বাস জন্মে যায়। আবার অপেক্ষা করতে করতে কখনও কখনও আলাপচারিতা জমে ওঠে। কিন্তু এভাবে যদি মানুষের বিশ্বাসভঙ্গের ঘটনা ঘটে, তাহলে তা দুশ্চিন্তারই বটে। বলছেন মহম্মদ ওলিউল্লা, শ্রীমন্ত সিং, আউজুল মল্লিকরা।
আরও পড়ুন :
গার্ডেনরিচকাণ্ডে ধৃত প্রোমোটার ওয়াসিমের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের ছবি ভাইরাল, গভীর সম্পর্ক?