সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, বলাগড়: একদিকে ভাঙন রুখতে তৈরি হচ্ছে নদী বাঁধ। আরেকদিকে, নদী পাড়ের মাটি কেটে তা নৌকাবোঝাই হয়ে পাচার হয়ে যাচ্ছে। বলাগড়ে (Balagarh) মাটি মাফিয়ার (Soil Mafia) দৌরাত্ম্য। এনিয়ে সরব খোদ তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA)। তৃণমূলের আমলেই মাফিয়ার বাড়বাড়ন্ত, আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি।


বলাগড়ে মাটি মাফিয়ার দৌরাত্ম্য: পাড় ভাঙতে ভাঙতে, একেবারে স্কুলের কিনারায় চলে এসেছে গঙ্গা। নদীর কবলে বিপন্ন শিক্ষাঙ্গন। সম্প্রতি, সংবাদ মাধ্যমে বলাগড়ের এই খবর জানতে পেরে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার এই স্কুলের অদূরে দেখা গেল মাটি মাফিয়ার দৌরাত্ম্য। ভাঙন কবলিত এলাকায় মাটি চুরি। নদীর পাড়ের মাটি কেটে রাতারাতি তা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এবার এনিয়ে সরব হলেন খোদ বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক।


সম্প্রতি দেখা যায়, মাটি চুরি রুখতে, রাতের অন্ধকারে বেরিয়েছেন তিনি। পাকড়াও করেছেন মাটি বোঝাই নৌকা। কিন্তু মাটি মাফিয়ার দৌরাত্ম্য যে কিছুতেই আটকানো যাচ্ছে না, তা নিজে মুখে স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। এবিষয়ে বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী বলেন, “প্রশাসন চেষ্টা করলে মাফিয়াগোষ্ঠী ভীষণ সক্রিয়। আমাদের চেষ্টা করেও সফল হতে পারছি না। মুখ্যমন্ত্রী জানেন ঘরবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে। তাই উনি বাঁধের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু মাফিয়াদের দমন করা যাচ্ছে না।’’


হুগলির বলাগড় ব্লক জুড়েই ব্যাপক নদী ভাঙন। ব্লকের ১৩টির মধ্যে, ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভাঙনের প্রভাব তীব্র। নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে একের পর এক কৃষিজমি। এই পরিস্থিতিতে, নদী পাড়ে বাঁধ তৈরি করছে প্রশাসন। যেখানে এত টাকা খরচা করে তৈরি হচ্ছে নদীবাঁধ। তার অদূরেই দেখা গেল, কেটে নেওয়া হচ্ছে নদী পাড়ের মাটি। তৈরি হয়েছে বিশাল বিশাল ভেড়ি। নদীপথে, নৌকো বোঝাই করে পাচার হয়ে যাচ্ছে তাল তাল মাটি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে কীভাবে তৈরি করা হচ্ছে এই ভেড়ি? মাটি মাফিয়ার বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওযা হচ্ছে না? এনিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এক বাসিন্দা রাজেশ দাসের কথায়, “আমরা ২ -৩ বার নৌকো ধরে দিয়েছি। খেটে খাওয়া মানুষ। কাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। যদি জীবন নষ্ট হয়ে যায়।’’


এ নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, “বিধানসভা ভোটে লড়ার সময় এই মাফিয়ার থেকে পয়সা নিয়েই লড়েছিল। পয়সা কালীঘাট অবধি পৌঁছেছে। এখন তো সেই টাকা তুলতে হবে। তাঁদের পয়সাতেই তৃণমূলের কাটমানি।’’ ঘটনা প্রসঙ্গে বলাগড়ের BDO জানিয়েছেন, গঙ্গার পাড়ে এভাবে মাটি কাটার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


আরও পড়ুন: West Bengal Transport: রাজ্য পরিবহণে এবার চালু হচ্ছে, ‘ওয়ান স্টেট ওয়ান কার্ড’ পদ্ধতি