চন্দননগর : বাড়ি ফিরলেন এভারেস্ট (Everest) জয়ী পিয়ালি বসাক (Piyali Basak)। প্রায় আড়াই মাস পর বাড়ি ফিরলেন মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষে ওঠা বাঙালিকন্যা। এলাকায় তাঁকে স্বাগত জানাতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হয়। ছোট থেকেই পাহাড়ে চড়ার শখ। শেষপর্যন্ত ২০২২-এ স্বপ্ন পূরণ। কৃত্রিম অক্সিজেন ছাড়াই পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পৌঁছন চন্দননগরের পিয়ালি।
আজ চন্দননগর পুরনিগমের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং এলাকাবাসী তাঁকে সংবর্ধনা জানান। একটি বিশেষ গাড়িতে করে শোভাযাত্রা সহকারে তাঁকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়। পিয়ালি জানান, ৬ বছর বয়স থেকেই বাবা-মা তাঁকে পাহাড়ে নিয়ে যেতেন। সেই থেকেই তাঁর পাহাড়ের প্রতি টান। আর্থিক অনটন সত্ত্বেও তাঁর পাহাড়ে চড়ার নেশা অব্যাহত। আর কয়েক মাসের মধ্যেই আরও একটি শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে তিনি বেরিয়ে পড়বেন।
আরও পড়ুন ; এভারেস্ট জয়ী পিয়ালি বসাকের হাতে এক লক্ষ টাকা তুলে দিল হুগলি জেলা সিপিএমের ছাত্র-যুবরা
পিয়ালির সাফল্যের কাহিনি-
গত ২২ মে রবিবার সকাল ৯টায় এভারেস্ট (Everest) জয় করেন হুগলির চন্দননগরের মেয়ে পিয়ালি বসাক (Piyali Basak)। তবে, শুধু এভারেস্ট জয়ই নয়, তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি অক্সিজেন সাপোর্ট ছাড়াই এভারেস্ট জয় করেন তিনি। প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে গড়েন নজির। পিয়ালি বসাকের আগে এভারেস্ট জয় করেছেন শিপ্রা মজুমদার, ছন্দা গায়েন, টুসি দাসের মতো বাঙালি মহিলা পর্বতারোহীরা।
পিয়ালির বরাবরের ঝোঁক, সাপ্লিমেন্টারি অক্সিজেন সাপোর্ট ছাড়াই শিখর ছোঁবেন তিনি। সেই মতো দেশের প্রথম মহিলা হিসেবে অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়া গত অক্টোবরে ধৌলাগিরি শৃঙ্গ জয় করেন। সাত মাসের মাথায় এভারেস্টের শিখর ছুঁয়ে নতুন রেকর্ডের অধিকারী তিনি!
দম বন্ধ করে সাইকেল চালিয়ে অক্সিজেন ছাড়া পর্বত অভিযানের প্রস্তুতি নিত মেয়ে। চন্দননগরের বাড়িতে বসে পিয়ালির কঠোর অধ্যবসায়ের কথা জানিয়েছিলেন তাঁর মা।
কানাইলাল প্রাথমিক বিদ্যামন্দিরের শিক্ষিকা। মার্শাল আর্টস-এ ব্ল্যাকবেল্ট, আইস স্কেটিং-এ দক্ষ পিয়ালির পাহাড়ের প্রতি টান সেই ছোট থেকে। পরিবার সূত্রে খবর, ২০০০ সালের অগাস্টে অমরনাথ তীর্থ দর্শনে গিয়ে খুব কাছ থেকে জঙ্গি হামলার ভয়াবহতা দেখেছিলেন পিয়ালি। ২০১৩ সালে কেদারনাথে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়েরও সাক্ষী তিনি। কিন্তু কিছুতেই পাহাড়ের প্রতি ভালবাসা কমেনি।
আর্থিক প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে এভারেস্ট অভিযানের জন্য নিজেই ক্রাউড ফান্ডিং করেছেন। তাই সাধারণ বাড়ির মেয়ের অসাধারণ সাফল্যে উচ্ছ্বসিত সবাই।