সোমনাথ মিত্র , সিঙ্গুর, হুগলি: সিঙ্গুরের জমিতে শিল্পস্থাপনের দাবিতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে স্থাপন করা প্রতীকি শিলান্যাস ফলক ভেঙে দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখালেন DYFI-নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার সকালে সিঙ্গুরের প্রস্তাবিত টাটা কারখানার জমির সামনে দলীয় পতাকা হাতে বিক্ষোভে সামিল হন বামপন্থী যুব সংগঠনের সদস্যরা। ডিওয়াইএফআই জেলা সভাপতির দাবি, শিল্প করতে না পারার হতাশা থেকেই শাসক দল এই কাজ করেছে। অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্ৰেস।
ইতিহাস:
২০০৬ সাল। তখন রাজ্যের শাসনে ছিল বামফ্রন্ট। সেই সময় সিঙ্গুরের প্রায় ১০০০ একর কৃষি জমিতে টাটার ছোট গাড়ি কারখানা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারই বিরোধিতা করে সিঙ্গুরে জমি আন্দোলন শুরু হয়। সেখানেই পরে আন্দোলনের নেতৃত্ব উঠে আসে তৃণমূলের হাতে। আন্দোলনের জেরে শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায় কারখানার গড়়ার পরিকল্পনা। সিঙ্গুর থেকে গুজরাতে কারখানা সরিয়ে নিয়ে যায় টাটা। পরে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। ক্ষমতায় এসেই জমি ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করে তৃণমূল সরকার। পরে কোর্টের রায়ে সিঙ্গুরের জমি ফেরত পায় কৃষকেরা। কিন্তু পরে আবার সিঙ্গুরে কারখানার দাবিতে সরব হয় একাংশ। একই দাবি করে বামপন্থীরাও। ডিওয়াইএফআই-এর তরফে ২০২১ সালের ৩রা ফ্রেব্রুয়ারি সিঙ্গুরের সেই জমির সামনে কারখানার দাবিতে প্রতীকি শিলান্যাস করা হয়। উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। সেই শিলান্যাস ফলক ভেঙে দেবার অভিযোগে সরব বামপন্থী যুব সংগঠনের সদস্যরা। বুধবার সকালে সেই ভেঙে দেওয়া ফলকের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
কী অভিযোগ:
হুগলি জেলা ডিওয়াইএফআই সংগঠনের জেলা সভাপতি সুমন মাল বলেন, '২০২১ সালে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে কারখানা করবে বলে প্রতীকি শিলান্যাস করা হয়েছিল তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এটা তৃণমুল সরকারের হতাশার বহিঃপ্রকাশ যে, তারা কারখানা করতে পারছে না, চাকরি দিতে পারছে না। সেই হতাশা থেকেই তারা এটা করেছে। সিঙ্গুরের মানুষ কারখানা পেল না, জমি চাষযোগ্য করেও ফেরত পেল না।'
তৃণমূলের পাল্টা:
অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমুল। সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দুধকুমার ধাড়া বলেন, 'যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সেই শিলান্যাস কে বা কারা ভেঙেছে তা জানি না এবং সেটাকে সমর্থনও করি না।' সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না অবশ্য এ বিষয়ে কিছু মন্তব্য করতে চাননি।
আরও পড়ুন: ভিডিও কলে ওঁত পেতে বিপদ, সচেতন করতে ইউটিউব চ্যানেল পুলিশের