কলকাতা: আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়েরের আবেদন কলকাতা হাইকোর্টে। দুপুর ২টোয় লিখিত বক্তব্য নিয়ে আসার জন্য আইনজীবীকে নির্দেশ। এই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা।
আমতায় ছাত্রনেতাকে খুনের অভিযোগে, দেড় দিনের মাথায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখনও অধরা অভিযুক্তরা। বিক্ষোভের মুখে ফিরলেন ASI। CBI তদন্তের দাবি তুলেছে নিহতের পরিবার। সূত্রের খবর, DGP-কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন হাওড়া গ্রামীণের SP। হাওড়ার আমতায় ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর তদন্তে প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। পরিবারের দাবি, শুক্রবার রাতেই আনিসকে হত্যার খবর দেওয়া হয় আমতা থানায়! কিন্তু পুলিশ যায় পরদিন সকালে। ঘটনার দেড়দিন পরে ফরেন্সিক পরীক্ষা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
শুক্রবার তখন গভীর রাত। আমতার নিহত ISF’র ছাত্রনেতা আনিস খানের পরিবারের দাবি, ওই সময়েই পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারের পোশাকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন চারজন।
ছেলের মৃত্যুর পর রাতেই পুলিশকে বারবার ফোন করে আসতে বলেছিলেন, বলে দাবি করেছেন নিহতের বাবা। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ আসে শনিবার সকাল ৯টায়। শুধুমাত্র আনিসের মৃতদেহ নিয়ে চলে যায় তারা।
কিন্তু প্লেস অফ অকারেন্স বা ঘটনাস্থলে যেখানে রক্তাক্ত দেহ পড়ে ছিল, সেই জায়গা ঘেরেনি পুলিশ। সংগ্রহ করা হয়নি কোনও নমুনা। এমনকী, মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার পর আর পুলিশের তরফ থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি বলে দাবি নিহতের পরিবারের।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার বিকেলেই হয়ে যায় ময়নাতদন্ত। রাজ্যজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ-প্রতিবাদের পর রবিবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে, RAF-কে নিয়ে নিহত ছাত্রনেতার বাড়িতে যান আমতা থানার ASI সুরজিৎ পাত্র। অর্থাৎ মৃত্যুর দেড় দিনের মাথায় তদন্ত শুরুর তৎপরতা দেখা গেল পুলিশের।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ততক্ষণে পেরিয়ে গেছে তদন্তের ‘গোল্ডেন আওয়ার’। প্রায় গোটা একটা দিন অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে ছিল প্লেস অফ অকারেন্স বা ঘটনাস্থল। সেই জায়গা ঘিরতে যেতেই তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েন ASI।
বিক্ষোভের জেরে সকালে আর ঘটনাস্থল ঘিরতে পারেনি পুলিশ। বাধ্য হয়ে এলাকা ছাড়েন ASI। পুলিশ ফিরে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে আসেন ফরেন্সিক আধিকারিকরা। কিন্তু যেভাবে গোল্ডেন আওয়ার পেরিয়ে গেল, তাতে অনেক তথ্য-প্রমাণের অভাব দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
হাওড়ার আমতায় আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনায় বড়সড় প্রশ্নের মুখে আমতা থানার পুলিশের ভূমিকা। দাবি করা হচ্ছে, ছেলের মৃত্যুর পরে একাধিকবার আমতা থানায় ফোন করেন আনিসের বাবা। কিন্তু, অভিযোগ, সব জানানোর পরও রাতে পৌঁছয়নি পুলিশ! ভাইরাল হয়েছে একটি অডিও ক্লিপ। যার সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।
হাওড়ার আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানকে পরিকল্পিতভাবে খুনের অভিযোগ করে সিপিএম। এই নিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করেছে কংগ্রেস-বিজেপিও। অভিযোগ অস্বীকার করে শাসক দলের দাবি, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।