আবীর ইসলাম, বীরভূম: খাদ্য, বস্ত্র বাসস্থান নয়, মাতৃভাষার অধিকার ছিনিয়ে আনতে প্রাণ দিয়েছিলেন ভাইয়েরা। সেই আবেগ এবং ঐতিহ্যের একুশ (International Mother Language Day) পা রাখল সত্তরে। তাই ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশ’-এর সুরেই রক্তিম আলপনায় সেজে উঠল শান্তিনিকেতন (Santiniketan)।


গোটা বিশ্বের সঙ্গে সোমবার বিশ্বভারতীতেও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (21 February)। প্রাণের মায়া ত্যাগ করে ভাষার অধিকার ছিনিয়ে আনতে নিজেকে বলি দিয়েছিলেন যাঁরা, সেই শহিদ ভাইদের স্মরণে তৈরি করা হয়েছে শহিদ বেদি। রাস্তা জুড়ে আঁকা হয়েছে আলপনাও। সেখানে শ্রদ্ধা জানানো হয় ভাষা আন্দোলনের শহিদদের।


এ দিন ভোর রাত থেকে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় বিশ্বভারতীতে (Visva Bharati)। ভোর ৪টে থেকে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশ’ গাইতে গাইতে পদযাত্রায় সামিল হন পড়ুয়ারা। বিশ্বভারতীর আধিকারিক, অধ্যাপক, অধ্যাপিকারাও সামিল হন ওই পদযাত্রায়। বাংলাদেশ ভবনে এসে শেষ হয় বৈতালিক। সেখানে শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করা হয়। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীরও যোগ দেয়ার কথা ছিল, তবে তিনি এখনও যোগ দিতে পারেননি।


আরও পড়ুন: West Bengal Fog : শীতের বিদায়বেলায় কুয়াশা যখন ...


১৯৪৭ সালে দেশভাগের ঢের আগেই ভাষার অধিকারে হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন পূর্ব এবং পস্চিম পাকিস্তান গঠিত হওয়ার পর সেই উদ্বেগ বাস্তব হয়ে ধরা দেয়। মাতৃভাষার পরিবর্তে অন্য ভাষাকে রাষ্ট্রভাষাস্বরূপ মেনে নেওয়াকে দাসত্বেরও সমান বলে মনে করে গর্জে ওঠেন পূর্ব বঙ্গের বাঙালিরা। সাংস্কৃতিক এবং ভাবনার পার্থক্য নিয়েও সরব হন তাঁরা। ধীরে ধীরে সমাজের সব স্তরে তা ছড়িয়ে পড়ে।


১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে সীমিত একটি আন্দোলন হলেও ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে ১৪৪ ধারা অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাজপথে বেরিয়ে এলে তাঁদের উপর গুলি চালায় পুলিশ। তাতে কয়েক জনের প্রাণহানি হয়। সেই আন্দোলনের স্মরণেই ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসেবে গোটা বিশ্বে স্বীকৃত। প্রতিবছর শান্তিনিকেতনে এই দিনটিকে বিশেষ ভাবে পালন করা হয়।