সুনীত হালদার, ফুলেশ্বর: ফের জটিল অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচল এক শিশুর। চিকিৎসকদের চেষ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরল শিশুটি। তার পরিবারের লোকজন ধন্যবাদ জানাচ্ছেন হাওড়ার ফুলেশ্বরের সঞ্জীবন হাসপাতালের চিকিৎসকদের।


শিশুটির পরিবার সূত্রে খবর, তাদের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরে তমলুকে। সেখানকার একটি হাসপাতালে কিছুদিন আগে জন্ম হয় শিশুটির। জন্মের পরেই দেখা যায়, শিশুটির পেটের উপর যে চামড়ার আস্তরণ থাকে, তা নেই। ফলে জন্মানোর পরেই শিশুটির পেটের ভিতরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বাইরে বেরিয়ে আসে। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার কথা বলেন তমলুকের সেই হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তড়িঘড়ি শিশুটির পরিবারের লোকজন তাকে নিয়ে চার ঘণ্টার মধ্যে ফুলেশ্বরে সঞ্জীবন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ১ ডিসেম্বর সঞ্জীবন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে। জটিল অস্ত্রোপচার এবং চিকিৎসার ফলে শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠেছে।


সঞ্জীবন হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ‘শিশুটিকে যখন এখানে নিয়ে আসা হয়, তখন তার পেটে চামড়ার স্তর ছিল না। ফলে তার পেটের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বাইরে বেরিয়েছিল। এই ধরনের শারীরিক পরিস্থিতি বিরল। সেই কারণে সদ্যোজাতর প্রাণ বাঁচানো যথেষ্ট কঠিন ছিল। পেটের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বাইরে থাকলে জটিল অস্ত্রোপচার করে সেগুলি পেটের ভিতর  ঢুকিয়ে দিয়ে ঠিক করা হলেও, তারপর ভয় থাকে সংক্রমণের। সেই সব দিক বিবেচনা করেই আমরা দ্রুত শিশুটির চিকিৎসা শুরু করে দিই। অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়। চিকিৎসকদের একটি দল গঠন করে শিশুটির অস্ত্রোপচার হয়।’


চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার সফল হলেও, সংক্রমণের আশঙ্কা ছিল। এই ধরনের জটিল অস্ত্রোপচারে সবসময়ই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এই শিশুটির জটিল অস্ত্রোপচারের পর এক মাস ধরে চিকিৎসা চলে।  এই এক মাসের মধ্যে শিশুটিকে বেশ কিছুদিন ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। এক মাসে অত্যন্ত  যত্ন নিয়ে অত্যাধুনিক কেয়ার ইউনিট সাপোর্ট দিয়ে চিকিৎসা চালানো হয়। এক মাস দশ দিন চিকিৎসা চলার পর আজ শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠেছে। পরিবারের লোকজন বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন শিশুটিকে। 


সঞ্জীবন হাসপাতালের ডিরেক্টর শুভাশিস মিত্র জানিয়েছেন, শিশুটির চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার যথেষ্ট ব্যয়বহুল। তবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ব্যবস্থা থাকায় শিশুটির পরিবারকে সমস্যায় পড়তে হয়নি।