সুনীত হালদার, হাওড়া: আর মাত্র কয়েকদিন পরই ভালোবাসার দিন। ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র (Valentines Day 2022) প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রেমিক-প্রেমিকা, দম্পতিদের মধ্যে। ভালোবাসার সপ্তাহে তাই চাহিদাও বেড়েছে গোলাপের। কিন্তু ভালোবাসার দিন আসার আগেই অজানা ভাইরাসের আক্রমণ গোলাপের ফলনে। বাজারে চাহিদা থাকা সত্বেও গোলাপের ফলন খারাপ হওয়ায় চিন্তায় বাগনানের (Bagnan) কৃষকরাষ তাই এবছর প্রেমের দিনে যে গোলাপের দাম বাড়বে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।


জানা যাচ্ছে, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন্স ডে। প্রতি বছর এই দিনটির আগে দেশজুড়ে গোলাপের চাহিদা বাড়ে। সেই চাহিদাকে লক্ষ্য রেখে হাওড়ার বাগনানের দু নম্বর ব্লকের রূপনারায়ন নদীর চড়ে হরেকরকম গোলাপ চাষ করেন ফুলচাষিরা। কমপক্ষে ৮০০ হেক্টর জমিতে প্রায় দু হাজার কৃষক ওরফুলি, হেলেদীপ, বিরামপুর কাঁটাবেড়িয়া, মালঞ্চ এলাকায় চাষ করেন। এই গোলাপ কলকাতার জগন্নাথ ঘাট ফুলবাজারের পাশাপাশি কোলাঘাট এবং রাজ্যের অন্যান্য ফুল বাজারে চলে যায়। এই এলাকার গোলাপের মান খুব ভালো হওয়ায় ভিন রাজ্যেও এখানকার ফুলের কদর রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ভ্যালেন্টাইন্স ডের পনেরো দিন আগে থেকেই কৃষকদের থেকে সরাসরি মাল কিনে নিয়ে যান ফুল ব্যবসায়ীরা।


আরও পড়ুন - Municipal Election 2022: বিধাননগরের কোভিড বিধি মেনে DCRC থেকে ভোটসামগ্রী বণ্টন | Bangla News


সূত্রের খবর, গত কয়েক মাস ধরে গোলাপ গাছে অজানা ভাইরাসের আক্রমণের ফলে গাছের ফুল গাছেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফুলে কালো কালো ছোপ পড়ে যাচ্ছে এবং ফুলের পাপড়ি খসে পড়ছে। আবার গাছে কুঁড়ি অবস্থাতেই ফুল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বেজায় সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। তাঁরা জানিয়েছেন সারা বছর এই সময়টায় বাড়তি লাভের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। কিন্তু ফুলের ফলন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাঁরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এই ক্ষতির জন্য তাঁরা ভাইরাসের আক্রমনের পাশাপাশি খামখেয়ালী আবহাওয়া এবং চাষের জমিতে বন শূকরের হানাকে দায়ী করেছেন।


বাগনানের ফুল ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যেই এই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের কৃষি ও উদ্যান বিভাগে। কৃষকদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের কৃষি ও উদ্যান বিভাগের আধিকারিকরা বাগান পরিদর্শন করলেও সমস্যার সমাধানে কোনও ব্যবস্থা করেননি। এমন অবস্থায় চাষিরা কার্যত অথৈ জলে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রেম দিবসে গোলাপ ফুল কেনার জন্য যে সাধারণ মানুষকে বাড়তি গাঁটের কড়ি খরচ করতে হবে, তা বোঝাই যাচ্ছে।