সন্দীপ সরকার, হাওড়া : হাওড়ার শিবপুরে রাম নবমীর মিছিল ঘিরে বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের পর শুক্রবার ফের অশান্তি ছড়াল হাওড়ায়। রামনবমীর দিনের ঘটনার জেরে পরদিনও শুরু হয় বিক্ষোভ। শুরু হয় ইটবৃষ্টি। ইটের আঘাতে জখম হন কয়েকজন পুলিশকর্মী।
লাঠিচার্জ করে পুলিশ
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। র্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বৃহস্পতিবারের হিংসার ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৩৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সরকারি কর্মীদের বাধা দেওয়া-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। শিবপুর জুড়ে পুলিশের টহলদারি চলছে। শান্তিপূর্ণভাবে রমজান পালনের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ধর্ম কখনও অশান্তির প্রশ্রয় দেয় না : মুখ্যমন্ত্রী
শুক্রবার এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, ' ধর্ম কখনও অশান্তিকে প্রশ্রয় দেয় না, ধর্ম শান্তির কথা বলে, কিন্তু বিজেপির এটা প্ল্যান ছিল, যেমন করে হোক দাঙ্গা লাগাবে। গতকাল বিজেপি দেশের প্রায় ১০০ টা জায়গায় করে। হাওড়ার ঘটনাটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। আমরা বারবার বলে দিয়েছিলাম, ওই রুটে যেন মিছিল না ঢোকে। তাও ক্রিমিনালরা বন্দুক, পেট্রোল বোমা, বুলডোজার সহ আরও নানারকম জিনিস নিয়ে ওরা ঢুকেছিল ইচ্ছে করে। যেখানে মাইনরিটিরা থাকে , সেখানে গিয়ে হামলা করেছে। '
শিবপুর-হিংসার পর এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ টেলিফোনিক সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, গণ্ডগোলকারীরা ইচ্ছে করে ওই এলাকায় ঢুকেছিল আশান্তি পাকাতে। তিনি বলেন, ' ওরা ওখানে ঢুকেছে, হামলা করেছে, দোকান ভেঙেছে, রমজান মাসে যারা উপবাস করে থাকে, তাদের ওখানে শান্তির পরিবর্তে অশান্তি পাকিয়েছে।...ওখানে পুলিশের কিছুটা ব্যর্থতা আছেই, আমি স্বীকার করি। অ্যাকশন যা নেওয়ার নেবই। আপাতত আমার আবেদন, এটা হিন্দুরা করেনি। আমরা সবাই হিন্দু। এটা করেছে বিজেপির হিন্দু মহাসঙ্ঘ, বজরং দল কীসব আছে তাদের নামে। তারা সরাসরি আক্রমণ করেছে। '
হাওড়ায় কী ঘটেছিল
সংঘর্ষ। ভাঙচুর। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি। গাড়িতে আগুন! বৃহস্পতিবার রামনবমীর মিছিল ঘিরে এমনই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাওড়ার শিবপুর থানা এলাকার জিটি রোড চত্বর। ভয়ে, তড়িঘড়ি দোকানের ঝাঁপ নামালেন ব্য়বসায়ীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ. স্লোগান-পাল্টা স্লোগানে তেতে ওঠে এলাকা। মুহূর্তে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ২ পক্ষ। পরপর গাড়িতে ভাঙচুর শুরু হয়। পুলিশের গাড়ি থেকে বাস, টোটো, অটো, দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশকে লক্ষ করে ছোড়া হয় ইট পাটকেল। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসে, হাওড়া সিটি পুলিশের বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামে র্যাফ। তাড়া করে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ।