সুনীত হালদার, হাওড়া: চোখের সামনে নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। আতঙ্কে দিন কাটছে হাওড়ার গাদিয়াড়ার বাসিন্দাদের। বালি ও মাটির বস্তা ফেলে ভাঙন রোখা যাবে না। কৃষকদের সুরে সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন শ্যামপুরের তৃণমূল বিধায়ক। সমস্যার কথা মেনে নিয়ে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন সেচমন্ত্রী।


ভাঙছে পাড়। চোখের সামনে একটু একটু করে নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষিজমি। কপালে চওড়া হচ্ছে চিন্তার ভাঁজ। আর তা নিয়েই সেচ দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন শ্যামপুরের তৃণমূল বিধায়ক।


ফি বছর বর্ষায় ভাঙন ধরে হাওড়ার শ্যামপুরের বাণেশ্বরপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাদিয়াড়া, অমরপুর, আমবেড়িয়া ও কেটিখোলা এলাকায়। বাসিন্দাদের দাবি, প্রতিবারই আশ্বাস মেলে, তবু তৈরি হয় না কংক্রিটের বাঁধ। 


হাওড়া শ্যামপুরের কৃষক পুলদারঞ্জন মান্নার কথায়, ২ বিঘা জমি গেছে, বাঁধ নির্মাণে জমি নিয়েছে সরকার, বিনামূল্যে জমি দিয়েছি। আজও বাঁধ তৈরি হয়নি। ঘটনায় চাষিদের সুরেই এবার সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন শ্যামপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর অভিযোগ, যেভাবে বালি এবং মাটির বস্তা দিয়ে বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে, তাতে ভাঙন রোখা যাবে না।


শ্যামপুরের তৃণমূল বিধায়ক কালীপদ মণ্ডলের কথা, 'বাসিন্দাদের দাবিকে সমর্থন করি, লক্ষ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে অস্থায়ীভাবে কাজ হয়েছে, বিনা পয়সায় জমি দেয়, এ ব্যাপারে সেচমন্ত্রীকে জানিয়েছি।' 


গাদিয়াড়ায় হুগলি, রূপনারায়ণ এবং হলদি নদীর সঙ্গমস্থলে কখনও জলের ধাক্কায়, কখনও বড় জাহাজ পেরোনোর সময় তীব্র জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে যায় নদীবাঁধ। এসবের মাঝে, এবার বড় ক্ষতি ডেকে এনেছে ঘৃর্ণিঝড় ইয়াস। 


এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে শ্যামপুর থানা নাগরিক ফোরাম। হাওড়া শ্যামপুর থানা নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক উত্তম রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, এখানে কৃষকরা জমি দিয়েছে, পাকা বাঁধের দাবি, প্রশাসনকে জানিয়েছি। তিনটে নদী, জাহাজ চলে, নদী চওড়া হয়ে যাচ্ছে। কৃষকদের দাবি মেনে নিয়ে পাকা বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন সেচমন্ত্রী। 


সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, গ্রামবাসীদের দাবি অমূলক নয়, ইয়াসের পর বাঁধে ক্ষতি, হঠাৎ বিপদ রুখতে অস্থায়ী বাঁধ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ আছে পাকাপাকিভাবে। কিন্তু আর আশ্বাস নয়, ক্ষতিগ্রস্তরা চান, স্থায়ী সমাধান।