সুনীত হালদার, হাওড়া: বোরো চাষের জন্য ডিভিসির ছাড়া জলে অকাল বন্যা হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে।  নদীর বাঁধ ভেঙে হাওড়া এবং হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। তবে আজ নতুন করে আর সেভাবে জল না ঢুকলেও  জমা জল  ক্রমশ নিচের দিকে দক্ষিণ  উদয়নারায়ণপুরের আরো দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু কিছু জমি প্লাবিত করছে। মানশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু জমি ইতিমধ্যে প্লাবিত করেছে এবং ভবানীপুর সোনাতলা গ্রাম পঞ্চায়েত ও কিছু জমি প্লাবিত করবার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে নতুন করে আরও ৫০০ থেকে ৭০০ বিঘা জমি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। 



             
চাষের জন্য ছাড়া ডিভিসির জলের চাপে গত শনিবার হুগলির বলাইচক এলাকায় চিংড়া খালের বাঁধ ভেঙে হু হু করে জল ঢুকে হুগলির কিছু অংশ ভাসায় এবং তারপর সেই জল হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে ঢুকে আলুর ক্ষেত নষ্ট করেছে। ইতিমধ্যে ৭০০ বিঘার আলু নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ চাষীদের। জানা গিয়েছে, আজ সোমবার থেকে হুগলির বলাইচকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। ফলে প্লাবনের আশঙ্কা কমেছে। কিন্তু যে জলটা উদয়নারায়নপুরে জমে ছিল সেই জল ক্রমশ নীচের  দিকে নামছে।


উদয়নারায়নপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্যাণ গায়েন বলেন, জমা জলে আলু চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। মাঠের আলু পুরোপুরি তুলতে না পারায় চাষীদের এখন মাথায় হাত। কীভাবে এই ক্ষতি তারা পোষাবেন  তাই নিয়ে কপালের ভাঁজ চওড়া হচ্ছে। যদিও তিনি আশ্বাস দেন সরকারি ন্যায্যমূল্যে ওই আলু কেনা হতে পারে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। শস্য বীমা থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।


গতবছর ভারী বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলা। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুরের বিঘার পর বিঘা চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছিল। জমা জলে পড়ে থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট হয়েছিল। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর। জলে ডুবে গিয়েছিল ধান গাছ। সবজির জমিতেও জল থৈ থৈ করে। এদিকে যখন এই ঘটনা ঘটেছিল, তার ঠিক পরে পরেই  ধান কাটার সময়। বলার অপেক্ষা রাখে না, চরম ক্ষতির মুখোমুখী হয়েছিল কৃষকরা।


আরও পড়ুন, বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় ক্লান্ত শোভন, বিস্ফোরক রত্না, 'কল্যাণদাই বলেছিলেন, ডিভোর্স দিবি না..'!


মূলত ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায়।  বাঁকুড়ার কোতুলপুরে কংসাবতী সেচ ক্যানাল ভেঙে হরিহট্টপুর মৌজা সংলগ্ন এলাকায় প্লাবিত হয়েছিল বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। রাইপুর, সারেঙ্গাতেও টানা বৃষ্টির জেরে জল জমে গিয়েছিল বেশিরভাগ চাষের জমিতে। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, ঘাটাল, চন্দ্রকোণা, দাঁতনের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। টানা বৃষ্টির জেরে বেশিরভাগ ফসলই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বৃন্দাবনপুর, পঞ্চমদূর্গা, নস্করদিঘি, গোঁসাইবেড়, মাইসোরা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন।