গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বকখালির সমুদ্রসৈকত (Tree Felling At Bakkhali) থেকে অবাধে চলছে গাছচুরি। বড় বড় গাছ কেটে বিক্রি করছেন স্থানীয়দের একাংশ, অভিযোগ এমনই। এতেই শেষ নয়। ছবি তুলতে গিয়ে অভিযুক্তদের হাতে হেনস্থার শিকার হতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদেরই অন্য় অংশকে। নজরদারি বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে, জানিয়েছে বন দফতর। 


পরিস্থিতি...
দিনের আলোয় নির্বিচারে চলছে সবুজ-নিধন। ধরা পড়তেই কেউ লাঠি নিয়ে তেড়ে এলেন। কলার ধরে রীতিমতো টানাহ্যাঁচড়া করে মোবাইল ফোন কাড়ার চেষ্টা করলেন, শেষমেশ ক্যামেরা দেখে দৌড়ে পালালেন। এমনই অভিযোগ উঠেছে ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম পছন্দের ডেস্টিনেশন বকখালি। যেখানে সমুদ্র সৈকতের অনেকটা জুড়ে রয়েছে ঝাউবন। সেই ঝাউবনেই অবাধে গাছ কাটা চলছে বলে অভিযোগ। বড় বড় গাছ কেটে 'বিক্রি' করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ! সেই ছবি তুলতে গেলে রীতিমতো হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের অন্য অংশকে। ক্যামেরা দেখে লাঠি নিয়ে তেড়ে আসেন এক মহিলা। টেনে হিঁচড়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। শেষমেশ, প্রশ্নের মুখে পড়ে কাটা গাছ ফেলে রেখেই দৌড়ে পালান কেউ কেউ। বিষয়টি নিয়ে বনসহায়ক কমিটির সদস্য বিশ্বেশ্বর প্রামাণিক বললেন, 'বনদফতরকে জানানো হয়েছিল। যথাযথ পদক্ষেপ করেনি।' তৃণমূল পরিচালিত ফ্রেজারগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাশীনাথ জানার অবশ্য দাবি, অভিযোগ পেয়েই গাছ কাটা রুখতে উদ্যোগ নিচ্ছে বন দফতর। তারা জানিয়েছে, পঞ্চায়েতের সদস্য ও গ্রামবাসীদের নিয়ে বৈঠক করে সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হবে। ওই এলাকায় মহিলা বনকর্মী না থাকায়, অন্যান্য রেঞ্জ থেকে কয়েকদিনের জন্য মহিলা কর্মী নিয়োগ করা হবে। মহিলা পুলিশ মোতায়েনের জন্য স্থানীয় থানাকে অনুরোধ করা হবে বলেও জানিয়েছেন ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার। কিন্তু তত দিন পর্যন্ত এই নির্মম আক্রমণ থেকে বাঁচানো যাবে গাছের সারিকে? নির্জন সমুদ্রতট, আদিগন্ত বিস্তৃত নীল জলরাশি, সবুজ ঝাউবনের হাতছানি...বকখালির এই মনোরম ছবি কি বেঁচে থাকবে সে পর্যন্ত? এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছেই।


নানা দিকে এক অভিযোগ...
গত মার্চে কিছুটা এক অভিযোগ ওঠে মালদার ভূতনির চরে। শোনা গিয়েছিল, ভূমিক্ষয় আটকে নদীবাঁধকে শক্ত রাখে যে গাছ, সরকারি উদ্য়োগে লাগানো সেই গাছই চুরি হয়ে যাচ্ছে নদীবাঁধ থেকে! অশনি সঙ্কেত দেখেন মালদার মানিকচকের ভুতনির বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, অবাধে চলছে গাছ চুরি, দুর্বল হচ্ছে নদীবাঁধ। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে যায়। 
এসবের মাঝে প্রশ্ন একটাই। 'আগ্রাসন' থেকে আখেরে বাঁচানো যাবে তো প্রকৃতিপ্রদত্ত এই 'সবুজসাথীকে'?  


আরও পড়ুন:মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর হুঁশ ফিরল প্রশাসনের, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আলিপুরদুয়ারে হাল ফিরল রাস্তার