কলকতা : জেলা নেতৃত্বের থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা শুরুর ঘণ্টা দেড়েক আগেই বহরমপুর স্টেডিয়ামে পৌঁছে গেছিলেন। মূল মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখনই সাংবাদিকদের থেকে জানতে পারেন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেছেন ফিরহাদ হাকিম। তারপরই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেন হুমায়ুন। স্পষ্ট বলে দেন, ফিরহাদের কথার জবাব দেবেন না। যে নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন, তিনি সরাসরি বলে দেন, নিজের দল ঘোষণা করছেন, তাঁর দলের প্রতিনিধিরা ১৩৫ আসনে ভোটে লড়বে। এখানেই থামেননি তিনি। তৃণমূল দল, দলনেত্রী, সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ শানান তিনি। রীতিমতো ছুড়ে দেন চ্যালেঞ্জ।  '২২ ডিসেম্বর বহরমপুরের টেক্টটাইল মোড়ে আমার নতুন দলের আমি ঘোষণা করব। যে  বিজেপি দল সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে, তাদের বিরুদ্ধে লড়ব। তৃণমূলের তোলাবাজি, নেতাদের বিরুদ্ধেও লড়ব। তাদের যে দুর্নীতি, সারা রাজ্য়ে চলছে, জেলায় চলছে, এখানে যারা দুর্নীতিবাজ, তাদের গুরুত্ব দেওয়া হয়...আম জনতা ফয়সালা দেবে।'

Continues below advertisement

গত কয়েকমাসে একাধিক বার তিনি দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। দল শো-কজও করে তাঁকে। এবার একেবারে সাসপেন্ড। বোঝাই যাচ্ছে, হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সংঘাত চরমে উঠেছে! এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন হুমায়ুন। 'মমতা ব্যানার্জি আমাকে গ্রেফতার করা ছাড়া কিছুই করতে পারবে না। আরেকটা করতে পারে, আমাকে কাউকে দিয়ে খুন করিয়ে দিতে পারে।' হুমায়ুন জানালেন, বাবরি মসজিদ করার জন্য়ই তাঁর সাসপেনশন, মনে করছেন তিনি। তিনি জানিয়ে দিলেন, সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠবেন না। ৬ তারিখে যে বাবরি মসজিদের শিলান্য়াস,সেটা হবে। তাতে যে কোনও চক্রান্তের মোকাবিলা আমি করব।  

এর আগে ২০১৫-র ফেব্রুয়ারিতেও দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তুলে তৃণমূল থেকে ছ’বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল হুমায়ুন কবীরকে । তখনও তিনি খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন।  ২০১৫-র ২৭ ফেব্রুয়ারি, তা আনন্দবাজার পত্রিকায় খবরও হয়েছিল, সেখানে লেখা হয়েছিল, 'নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহারের পরে হুমায়ুনের আশঙ্কা, এবার তাঁকে খুন করা কিংবা মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করা হতে পারে।' 

Continues below advertisement

কংগ্রেস দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু। তারপর তৃণমূল। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি। ফের তৃণমূল। এবার নতুন দল তৈরির পথে হুমায়ুন কবীর। রাজনীতিতে সম্পর্কের এই জল এখন কোন খাতে বয়, সেটাই দেখার।