রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ:  অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডোমকলে পা রাখার আগে, মুর্শিদাবাদে তৃণমূলকে পরাস্ত করার হুঙ্কার ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের। দল কড়া পদক্ষেপ নিলেও আপত্তি নেই, সাফ বক্তব্য হুমায়ুন কবীরের। মনোরঞ্জন ব্যাপারী, আব্দুল করিম চৌধুরীর পর এবার হুমায়ুন কবীরকে নিয়ে তীব্র অস্বস্তিতে তৃণমূল। 


ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, আগামী দিনে মুর্শিদাবাদ জেলায় ২০ কে ২ করার দায়িত্ব আমি নেব।


না, কংগ্রেস কিংবা বিজেপির কোনও নেতা নন। মুর্শিদাবাদের মাটিতে তৃণমূলকে পরাস্ত করার হুঙ্কার দিচ্ছেন খোদ তৃণমূল বিধায়কই। পঞ্চায়েতের টিকিট বিক্রির অভিযোগ প্রসঙ্গে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। হুমায়ুনের মুহূর্মুহু হুঙ্কারে পঞ্চায়েত ভোটের আগে লাগাতার অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূলের অন্দরে। তৃণমূল জেলা সভাপতি ও জেলা চেয়ারম্যানকে সরানোর দাবিতে মঙ্গলবার বহরমপুরে সভা রয়েছে হুমায়ুন কবীরের।  কিন্তু প্রশাসনের তরফে সেই সভার অনুমতি না মেলায়, এদিন হুঙ্কার শোনা গেছে তৃণমূল বিধায়কের গলায়। ইঙ্গিতপূর্ণ বিষয় হল, মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের ডোমকলে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সভা রয়েছে। তার আগেই চ্য়ালেঞ্জ ছুঁড়লেন হুমায়ুন কবীর।


হুমায়ুন কবীর এদিন আরও বলেন, আমি আইন ভাঙিনি, আমি আইন মোতাবেক সময়সীমা অনুযায়ী আমার গণতান্ত্রিক নাগরিক হয়ে সভা করব। আমার দাবি একটাই , শাওনি সিংহ রায়কে নিয়ে তৃণমূল দল এখানে থাকবে নাকি হুমায়ুন কবীর সহ যারা নির্বাচিত বিধায়ক তাঁদের ন্য়ূনতম সম্মানের কথা ভেবে তৃণমূল দল পরিচালিত হবে সেটার ডিসিশন নেওয়ার মালিক আমি নয় সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় , অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরা নেবেন


কয়েকদিন আগেই, বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্য়াপারী ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, আগের চাকরির পেনশন, গ্র্যাচুইটি পাই না, তাই ছাড়তে পারছি না। বিধায়ক পদ ছাড়লে খাব কী? পেনশন শুরু হলে বিধায়ক পদ থেকেও সরে দাঁড়াব। 


এবার একই সুর ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়কের গলাতেও। হুমায়ুন কবীরের কথায়, আমি যেটা প্রতিবাদ করছি, মনোরঞ্জন ব্যাপারী বলাগড়ের এমএলএ তিনিও বলেছেন যে পঞ্চায়েতের টিকিট বিক্রি হয়েছে। তাহলে দল যদি তাঁদের রিঅ্যাক্ট করে আর হুমায়ুন কবীরকে শাস্তি দেয় প্রস্তুত আছি আমি।


পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কথায়, আমি বড়, তুমি বড়, কেউ বড় নয়। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ছবি ছিল, তাই ফিরহাদ হাকিমও জিতেছে, হুমায়ুন কবীরও জিতেছে। যেদিন এই ছবিটা মাথায় থাকবে না ভাই, এই জনগণও থাকবে না, ভোটও থাকবে না।


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী আবার বলছেন, দেখুন তৃণমূলের মধ্য়ে যে অসন্তোষ ধূমায়িত হচ্ছে, এগুলো তার বহিঃপ্রকাশ। এটা শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, সারা পশ্চিমবঙ্গেই এই জিনিসটা প্রকাশ পাচ্ছে। আর মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূলটা হিনদু তৃণমূল আর মুসলমান তৃণমূল হয়ে গেছে। বড় অদ্ভূত সাম্প্রদায়িক বিভাজন ঘটেছে। এটা পরিকল্পিতভাবে হচ্ছে। প্রথমে নির্দলকে সমর্থন করার কথা। এবার মুর্শিদাবাদে তৃণমূলকে ২-এ নামিয়ে আনার হুঁশিয়ারি। তৃণমূলে ক্রমশই বাড়ছে হুমায়ুন অস্বস্তি।