কলকাতা: 'সরকারের উদ্দেশ্য সৎ থাকলে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করলে সেটা সমস্যার।''এক দেশ এক ভোট'-এর পক্ষে সওয়াল প্রশান্ত কিশোরের। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে সমাজের লাভ হবে, মত প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor)।


'এক দেশ, এক ভোট' (One Nation One Vote) চালুর পক্ষে জোর কদমে রাস্তায় নেমেছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদির গলায় বারবার 'এক দেশ, এক ভোট'-এর পক্ষে সওয়াল। তড়িঘড়ি কমিটিও গড়ে ফেলেছে তারা। এবার এই ইস্যুতে কার্যত নরেন্দ্র মোদির সুর প্রশান্ত কিশোরের গলায়। একদা নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের হয়ে ভোট কুশলীর দায়িত্ব সামলেছেন যে PK, তিনিই এখন 'এক দেশ, এক ভোট' চালুর পক্ষে সওয়াল করতে শুরু করলেন।

জন সুরজের প্রধান প্রশান্ত কিশোর বলেন, “যদি সঠিক উদ্দেশ্যে এটা করা হয়, আর একটা সময়কাল ৪ থেকে ৫ বছর, যাতে সবাই পর্যাপ্ত সময় পায়, তাহলে এটা দেশের পক্ষে হবে। এটার কারণ, এটা আগে দেশে চালু ছিল, ১৭-১৮ বছর ধরে, দ্বিতীয়ত ভারতের মতো বড় দেশে, আমি নিজে ভোটের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। প্রতি বছর দেশের ২৫% জায়গায় ভোট হয়, তাই যারা সরকার চালায়, তাঁদের বছরভব এই কাজের মধ্যে থাকতে হয়। যদিও এটা একবার বা দুবারে করা যায়, তাহলে খুব ভাল হয়। এতে খরচও বাঁচবে, জবাবদিহিও কম করতে হবে, তর্কও কম হবে, জনতাকেও একবার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’

রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসাবে প্রশান্ত কিশোর নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) হয়েও কাজ করেছেন, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের হয়েও। একসময় তাঁর কংগ্রেসের যোগদানের জল্পনা জোরাল হলেও, শেষ অবধি তাঁর পরিকল্পনায় সায় দেননি রাহুল-প্রিয়ঙ্কা গাঁধীরা। ২০১২ সালে গুজরাত বিধানসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদির হয়ে ভোট কুশলীর কাজ করেন প্রশান্ত কিশোর। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে প্রশান্ত কিশোর মোদির প্রচারের দায়িত্বে ছিল। ২০১৪-য় নরেন্দ্র মোদিকে ‘বিকাশপুরুষ’ হিসেবে তুলে ধরে তাঁর ‘অব কি বার, মোদি সরকার’-এর স্লোগান তৈরির নেপথ্য়ে ছিলেন প্রশান্ত কিশোর। আবার ২০২১-এর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে সামনে রেখে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’, প্রচারের সুর বেঁধেছিলেন এই প্রশান্ত কিশোরই। সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় দিল্লিতে যাওয়ার দিন কলকাতা বিমানবন্দরে দুজনকে একসঙ্গে দেখা যায়।

এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, এক সময় যাঁর থেকে পরামর্শ নিত তৃণমূল, সেই প্রশান্ত কিশোর 'এক দেশ, এক ভোট'কে সমর্থন করায় এখন এই ইস্য়ুতে তৃণমূলের অবস্থান কী হবে? ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে। তখনই সংসদে 'এক দেশ, এক ভোট' সংক্রান্ত বিল পেশ করা হতে পারে। এই জল্পনার মধ্যেই পিকের মন্তব্য কি নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে?

আরও পড়ুন: Dhupguri By Election: পিছু ছাড়ছে না 'সন্ত্রাস-আতঙ্ক', রাত পোহালেই ধূপগুড়িতে উপনির্বাচন