কলকাতা: নিয়োগ-দুর্নীতিকাণ্ডে (Recruitment Corruption) এবার কি ইডি-র (Enforcement Directorate) হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে অয়ন শীলের নোটপ্যাড?  অয়ন শীলের (Ayan Seal) অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া সাদা রঙের ২টি নোটপ্যাডই লাল ফিতেয় মোড়া ছিল, দাবি ইডি-র। ইডি-র দাবি, একটিতে মাত্র একটি পাতায় লেখা হয়েছে। আরেকটি নোটপ্যাডে ৯টি পাতায় লেখা রয়েছে বিভিন্ন নাম। এগুলি কাদের নাম, এজেন্টদের নাকি, বিশেষ কারও নাম লেখা রয়েছে নোটপ্যাডে? খতিয়ে দেখছে ইডি। ইডি-র দাবি, মিলেছে অয়নের পেট্রোল পাম্পের ২৮ পাতার লেজার বুক। 


ইডি-র স্ক্যানারে ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট: নিয়োগ-দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি-র স্ক্যানারে অয়ন শীল, তাঁর ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তী ও অয়নের আত্মীয়দের ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। ইডি সূত্রে খবর, তল্লাশির দিনেই অয়ন, অয়নের স্ত্রী কাকলি, বান্ধবী শ্বেতা, অয়নের বাবা সদানন্দ শীল, মা অমিতা ও অয়নের ছেলে অভিষেক-সহ আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের ৩২টি অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। এর মধ্যে রয়েছে অয়নের সংস্থা ABS ইনফোজোন প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ২টি অ্যাকাউন্ট ও হুগলিতে অয়নের পেট্রোল পাম্পের নামে ৩টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। ইডি-র সিজার লিস্টে এই অ্যাকাউন্টগুলির উল্লেখ রয়েছে। এই অ্য়াকাউন্ট থেকে কোথায় কোথায় লেনদেন হয়েছে, সেটাই খতিয়ে দেখছেন ইডি-র তদন্তকারীরা। 


শ্বেতা চক্রবর্তীর অ্যাকাউন্টে ৫৫ লক্ষ: অয়ন শীলের অ্যাকাউন্ট থেকে শ্বেতা চক্রবর্তীর অ্যাকাউন্টে ৫ দফায় গিয়েছিল ৫৫ লক্ষ টাকা। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে বিস্ফোরক দাবি করল ইডি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, তিনবার ১০ লক্ষ করে এবং একবার ২০ ও একবার ৫ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছিল শ্বেতার অ্যাকাউন্টে। এছাড়াও, অয়নের সল্টলেকের অফিসে শ্বেতাকে দেওয়া গাড়ির মানি রিসিট মিলেছে। হন্ডা সিটি কেনার জন্য অয়ন শ্বেতাকে টাকা দিয়েছিলেন বলে ইডি-র দাবি। সূত্রের খবর, অয়নের সঙ্গে শ্বেতার সম্পর্ক, কেন ৫৫ লক্ষ টাকা শ্বেতার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল, নিয়োগ-দুর্নীতির সঙ্গে শ্বেতার কোনও যোগ রয়েছে কি না, এই সবই অয়নের কাছে জানতে চাইছে ইডি। 


অনুব্রত কায়দায় কালো টাকা সাদা?  অন্যদিকে দেখা গিয়েছে আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের নামে বিপুল সম্পত্তি ক্রয় করেছিলেন অয়ন শীল। তবে কি  অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) কায়দাতেইকালো টাকা সাদা করতে আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের নামে সম্পত্তি কিনেছিলেন অয়ন শীল (Ayan Seal)? নিয়োগ-দুর্নীতিকাণ্ডে (Recruitment Corruption) ইডি-র (Enforcement Directiorate) হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইডি-র দাবি, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (South 24 Pargana) বেশ কিছু সম্পত্তি কিনেছিলেন অয়ন। এর মধ্যে ২০২০-তে লকডাউন-পর্বে গুড়াপের ঘোশলা মৌজায় ছেলে অভিষেক ও ছেলের ঘনিষ্ঠ ইমন গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে অয়ন ১ কোটি টাকার সম্পত্তি কেনেন। ঠিক তার আগের বছর, ২০১৯-এ ভাঙড়ের ব্যাওতা মৌজায় নিজের সংস্থার ABS ইনফোজোনের কর্মী রীতেশ জয়সোয়ালের নামে ৫ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা দিয়ে জমি কেনেন অয়ন। এর আগে, ২০১৬ সালে একই দিনে ভাঙড়ের ব্যাওতা মৌজায় সংস্থার কর্মী ও আত্মীয়দের নামে তিন-তিনটি জমি কেনেন অয়ন শীল। নিয়োগ-দুর্নীতির টাকাতেই এই সম্পত্তি-ক্রয় বলে মনে করছে ইডি।