বাঁকুড়া: বাঁকুড়া বিজেপিতে (Bankura BJP) কোন্দলের 'মধ্যমণি' কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার (Subhas Sarkar)। প্রভাব খাটিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগে সুভাষ সরকারকে তালাবন্দি রেখে যে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল, তা ঘিরে বিবাদ দেখা দেয় বিজেপিতে। একদিকে বিক্ষোভকারী বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন জেলা সভাপতি। পাল্টা আবার জেলা সভাপতির বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের একাংশের। বিজেপির জেলা সভাপতি ও সুভাষ সরকারের ব্যক্তিগত সহকারীর বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে তাতে। যদিও জেলা বিজেপির সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের দাবি, সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।


বিশদে..
বাঁকুড়া জেলা বিজেপির প্রাক্তন আহ্বায়ক কৌশিক সিংহের মতে, 'আমাদের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আমরা জানিয়েছি যে ঠিক কী কী কারণে সে দিন বিক্ষোভ করেছিলাম। সেখানে মিথ্যা একটি তফসিলি জাতি-উপজাতি নির্যাতনের মামলা দেওয়া হয়।' তাঁর আরও বক্তব্য, বাঁকুড়ার মানুষ কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আপ্ত সহায়ক ও বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতির বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ তুলছেন, তা খতিয়ে দেখুক পুলিশ। যদিও বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন।' বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। জোড়াফুল শিবিরের নেতা শ্যামল সাঁতরার বক্তব্য, 'লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, বিজেপিতে দ্বন্দ্ব আরও বৃদ্ধি পাবে।'


কী ঘটেছিল?
দিনচারেক আগেই কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীকে ঘেরাও করে ঘরে তালা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তাঁরই দলের কর্মীরা। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা বিজেপি কার্যালয়ে তালা বন্ধ করে দেওয়া হয় সাংসদকে। শুধু তাই নয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে 'দূর হঠো' স্লোগান দিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন দলীয় কর্মীরা। 'জেলায় একনায়কতন্ত্র চালু করে দলের ক্ষতি করছেন সুভাষ সরকার', অভিযোগ ছিল কর্মীদের। বিজেপির জেলা সভাপতি দলীয় কার্যালয়ে এলে তাঁকে ঘিরেও প্রবল বিক্ষোভ, হাতাহাতিও হয়। ঘটনার দিন বাঁকুড়া জেলা সাংগঠনিক কার্যালয়ে আসেন সুভাষ সরকার। সেখানে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে একটি বৈঠক করার কথা ছিল তাঁর। খবর পেয়ে বেশ কিছু বিজেপি কর্মী কার্যালয়ে জড়ো হয়ে যান। তাঁরা প্ল্যাকার্ড হাতে এসে সুভাষ সরকার 'দূর হঠো', 'গো ব্যাক' স্লোগান তোলেন। বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি ছিল, সুভাষ সরকার সাংসদ হয়েও সাংগঠনিক ক্ষেত্রে একনায়কতন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। সাংগঠনিক বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে হস্তক্ষেপ করে যাচ্ছেন। সাংগঠনিক দিকে দিয়ে ভাল যেসব বিজেপি কর্মী রয়েছেন, তাঁদের একের পর এক নির্বাচনে বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ, লোকসভার নির্বাচনে তাঁরা বিজেপির বা সুভাষ সরকারের হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন, খেটেছিলেন। তার পরই এই মামলা ও পাল্টা মামলা।


আরও পড়ুন:পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার যাত্রা শুরু, ১৫ হাজার টাকা ছাড়াও ২ লক্ষ টাকার ঋণ