কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় রাতেই হস্টেলের ১০-১৫ জন আবাসিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জয়েন্ট সিপি ক্রাইম জানিয়েছেন, প্রত্য়ক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগপত্রের জন্য় ছাত্রের বাড়িতে পাঠানো হয় পুলিশের প্রতিনিধি দল। অন্য়দিকে, DC SSD জানিয়েছেন, তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। তদন্তে সহযোগিতা করছেন আবাসিকরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুতে তোলপাড় রাজ্য। গভীর রাতে তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হয় সে পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, অভিযোগ করেন সহপাঠীর। সুস্থ স্বাভাবিক এক ছাত্রের কী করে মৃত্যু হল? প্রশ্ন তুলেছে পরিবার। খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।


ছাত্রের বাড়িতে এখন শুধুই অন্ধকার: ৭ দিন আগেই ভর্তি হয়েছিলে যাদবপুরে। ৩দিন ক্লাসও করেছেন। তারপরই নিভে গেছে স্বপ্ন-দীপ। বগুলার বাড়িতে এখন শুধুই অন্ধকার। হাহাকার করছেন বাবা-মা-পরিজনরা। বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সবার মুখে হাসি ফোটাতে গিয়ে কাঁদিয়ে দিলেন স্বপ্নদীপ। ছাত্র ছিলেন বিজ্ঞানের। কিন্তু বাংলা পড়তে ভীষণ ভালবাসতেন।  বাবা সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মী। মা গৃহবধূ। ভাই নবম শ্রেণির ছাত্র।  পরিবার সূত্রে খবর, ছোট থেকেই মেধাবী ছিলেন স্বপ্নদীপ। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে মাত্র ২ নম্বর কম পাওয়ায় কলেজে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে পারেননি। বাংলা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বাড়ির কাছের বগুলা কলেজে। তারপর যখন জানতে পারলেন, যাদবপুরের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, তখন আর আনন্দের সীমা ছিল না ।  


এক রাতে বদলে গিয়েছে সব আনন্দ: পরিবার সূত্রে খবর, গত ৩ তারিখ যাদবপুরে স্বপ্নদীপকে বাংলা অনার্সে ভর্তি করেন বাবা। হস্টেল না মেলায় রবিবার রেখে আসেন হস্টেলের সিনিয়র দাদাদের কাছে। সেই রেখে আসাই শেষ। বুধবার রাত ৯টা নাগাদ মা-বাবার সঙ্গে শেষবার ফোনে কথা। সহপাঠীদের দাবি, বুধবারই নিজের ফেসবুক প্রোফাই ডিঅ্যাক্টিভ করে দেন ওই পড়ুয়া। মৃত্যুর সঙ্গে এর কোনও যোগ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে যাদবপুর থানার পুলিশ। আর ফিরবেন না স্বপ্নদীপ। বড় ছেলেকে নিয়ে যে স্বপ্নের দীপ জ্বালিয়েছিলে সবাই, তা নিভে গিয়েছে এক ঝটকায়। 


কেন ভয় পাচ্ছিলেন পড়ুয়া? পরিবারের দাবি,  মৃত্যুর আগের দিন অর্থাৎ বুধবার রাতে ফোনে মাকে এই কথা বলেছিলেন স্বপ্নদীপ। বলেছিলেন, 'আমি ভাল নেই, প্রচণ্ড ভয় করছে। কিন্তু কেন ভয় পাচ্ছিলেন পড়ুয়া? কী করে তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে গেলেন তিনি? পরিবার-পরিজনদের অভিযোগ, স্বপ্নদীপ র‍্যাগিং-এর শিকার। যদিও র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ মেলেনি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়েন্ট রেজিস্ট্রার।