হিন্দোল দে, গৌতম মণ্ডল, অর্ণব মুখোপাধ্য়ায়: বোর্ড গঠনের সময় দিয়েও, আইনশৃঙ্খলার কারণ দেখিয়ে গোটা প্রক্রিয়া স্থগিতের নির্দেশ দিলেন বিডিও (BDO)। ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারের কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। ব্যাপক বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। একইভাবে মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতেও বিতর্ক শুরু হয়েছে পুলিশের ভূমিকায়।


বিরোধীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এবার পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে কীভাবে বিডিও, পুলিশ অফিসারদের মতো সরকারি কর্মীদের একাংশের নাম বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়েছে। এমনকি, বোর্ড গঠন পর্বেও সেই অভিযোগ ওঠা বন্ধ হল না!দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতে অপহরণ বিতর্কের পরে বিজয়ী বিরোধী প্রার্থীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। শেষ পর্যন্ত বিজেপি, সিপিএম, নির্দলের জয়ী ১১ জন প্রার্থী হাতে হাত মিলিয়ে সেখানে বোর্ড গড়তে পারলেও বিতর্ক থেকে বাদ গেল না পুলিশ!


সুন্দরবন পুলিশ জেলা সূত্রে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পর্যাপ্ত সুরক্ষার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে বোর্ড গঠন করার ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করা হয়েছে। এদিনই মথুরাপুর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে মন্দিরবাজার ব্লকের কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের ঠিক আধঘণ্টা আগে হঠাৎই কর্মসূচি স্থগিতের নোটিস দেন বিডিও! যাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম বেধে যায় পঞ্চায়েত অফিস চত্বরে!


ঝাণ্ডার ডান্ডা হাতে বিজেপি কর্মীদের দাপাদাপি!অটো ভাঙচুর!সরকারি কর্মীকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ!সরকারি কর্মী-সহ অটো উল্টে দেওয়ার চেষ্টা। কিচ্ছু বাদ গেল না। কৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৯টি। পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি জয়ী হয় ১১টি আসনে। তৃণমূলের দখলে যায় ৫টি আসন। ৩টি আসনে জয়ী হন আইএসএফ-এর প্রার্থীরা।


সংখ্যার বিচারে কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করতে কোনও বাধা নেই বিজেপির সামনে। প্রশাসনের দেওয়া সময় অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিজেপির জয়ী প্রার্থীরা হাজির হন পঞ্চায়েত অফিসের সামনে। কিন্তু, সাড়ে ১১টার সময় মথুরাপুরের বিডিও-র তরফে জারি করা হয় এই নোটিস।


নোটিসের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়, এদিন, বেলা ১২টার সময় কৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের জন্য যে বৈঠক ডাকা হয়েছিল, তা স্থগিত করা হচ্ছে...
কারণ হিসাবে জানানো হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে, পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা দিতে না পারায় এদিন বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। বিডিও-র পাঠানো নোটিসে এও উল্লেখ করা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হচ্ছে।  বিজেপি নেতাদের হাতে এই নোটিস পৌঁছতেই ক্ষোভ রাস্তায় নেমে আসে। এ বিষয়ে জানতে, মন্দিরবাজারে বিডিও-কে একাধিকবার ফোন হলেও, তিনি ফোন ধরেননি।