মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: বছরতিনেক আগেও সমস্যা দেখা গিয়েছিল। সে বার দুর্গাপুর ব্যারাজের ৩১ নম্বর গেটের একাংশ ভেঙে বিপত্তি বাধে। হু হু করে বেরিয়ে যেতে থাকে হাজার হাজার কিউসেক জল। অভিযোগ, সেচ দফতরে খবর দেওয়া হলেও ভাঙা গেট মেরামতির কাজ শুরু হতে দেরি হয়। এবারও একই ঘটনা যার জেরে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা করল সেচ দফতর। আগামী ১৩ অগাস্ট পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চলবে, জানাল সেচ দফতর।
কী ঘটেছে?
দুর্গাপুর ব্যারেজের ডাউনস্ট্রিমের ৩৩ ও ৩৪ নম্বর গেটের স্টপ লক বদল হওয়ার কথা। সেই জন্যই এবার যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে। রাত এগারোটা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকবে, জানাল সেচ দফতর। এই মেয়াদে এক মাত্র জরুরি পরিষেবা ছাড়া সমস্ত যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আগামী ১৩ অগাস্ট পর্যন্ত এই ব্যবস্থা। বস্তুত, দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দামোদর নদের ওপর তৈরি দুর্গাপুর ব্যারেজের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা নিয়ে জনরোষ দীর্ঘদিনের। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে দুই জেলার সাধারণ মানুষেরই। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা থাকলেও হুঁশ নেই প্রশাসনের। বছরদুয়েক আগেও দামোদর নদের ওপর তৈরি বাঁধের রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ায় বিপদে পড়েন অনেকে। জীবন হাতে নিয়ে এই রাস্তার ওপর দিয়ে যাতাযাত করতে হয় সাধারণ মানুষকে, অভিযোগ ছিল এমনই। সে বারও লকগেট বিপত্তিতে খবরের শিরোনামে চলে এসেছিল দুর্গাপুর ব্যারেজ। এবার আবার খবরের শিরোনামে সেই দুর্গাপুর ব্যারেজ।
প্রেক্ষাপট...
ব্যস্ততম এই রাস্তায় অতীতে বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে, মৃত্যুও হয়েছে। অভিযোগ, তার পরও হুঁশ ফেরেনি কারও। বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। রাস্তা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। দুর্গাপুর ব্যারেজের রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটলে নীচেই বয়ে চলেছে দামোদর নদের জলের ধারা। ঘটে যেতে পারে আরও ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। তার মধ্যেই নিরুপায় সাধারণ মানুষকে জীবন হাতে নিয়ে চলাচল করতে হয়েছে, এমন অভিযোগ ওঠে বছর দুয়েক আগেও। সে বার শাসক দলের সমালোচনা করে পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই জানান, সকলই কথার কথা। এই ইস্যুতে রাজ্য প্রশাসনকে বিঁধলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিআইএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার। তাঁর অভিযোগ, দুর্গাপুর ব্যারেজের গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা সংস্কারের প্রশ্নে অহেতুক টালবাহানা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। অবিলম্বে এই রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছিল পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সিপিআইএম নেতৃত্বও। এবার সেচ দফতর লকগেটের স্টপ লক বদলের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, বার বার কেন নানা সমস্যা ঘটে দুর্গাপুর ব্যারাজে?
আরও পড়ুন:টাকার বিনিময়ে বিস্ফোরক আদান-প্রদানের সেফ প্যাসেজ তৈরি করে দেন ধৃত TMC নেতা, দাবি NIA-র