আবীর দত্ত, কলকাতা : বীরভূমে বিস্ফোরক পাচারকাণ্ডে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর দাবি এনআইএ-র। টাকার বিনিময়ে বিস্ফোরক আদান-প্রদানের সেফ প্যাসেজ তৈরি করে দেন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি ইসলাম চৌধুরী, এমনই দাবি করছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি। NIA সূত্রে আরও খবর, মোটা অঙ্কের টাকার ভাগ যেত বিভিন্ন জায়গায়। সেই টাকা কোথায় কোথায় যেত, তা জানতে চায় কেন্দ্রীয় এই এজেন্সি।


বীরভূমে বিস্ফোরক পাচারকাণ্ডে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীনই বানিওর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী মনোজ ঘোষকে গ্রেফতার করেছিল NIA। এবার এই মামলায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পাইকরের কুশমোড় অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি ইসলাম চৌধুরী। শুক্রবার ভোর ৫টা নাগাদ, মুরারইয়ের বড়লীপাড়া গ্রামে ইসলাম চৌধুরীর বাড়িতে হানা দেয় NIA-র পাঁচ সদস্যের একটি টিম। বাড়ি ও তৃণমূল নেতার অফিসেও তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। এরপর তৃণমূল নেতা ও তাঁর বাবা ও স্ত্রীকে নিয়ে আসা হয় পাইকর থানায়। সেখানে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর ইসলাম চৌধুরীকে গ্রেফতার করে NIA। ধৃত ইসলাম চৌধুরীর স্ত্রী সস্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে কুশমোড় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। 


২০২২-এর জুনে, বীরভূমের মহম্মদবাজারে তল্লাশি চালিয়ে একটি গাড়ি থেকে ৮১ হাজার ডিটোনেটর উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশের STF। গাড়ির চালককে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ২৭ হাজার কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এবং ১ হাজার ৯২৫ কেজি জিলেটিন স্টিক ও আরও ২ হাজার ৩২৫টি ডিটোনেটর উদ্ধার হয়। সেই ঘটনার তদন্তভার নেয় এনআইএ। পেশায় সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার ও  বিকাশ ভবনে National Informatics Centre বা NIC-র প্রোজেক্টে কাজ করা এক যুবক-সহ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। চলতি বছরের পয়লা জুলাই বানিওর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী প্রার্থী মনোজ ঘোষকে গ্রেফতার করে NIA। সূত্রের খবর, তাঁকে জেরা করেই ইসলাম চৌধুরীর নাম উঠে আসে। 


এদিন ধৃতের থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা, একাধিক সিমকার্ড ভরা প্যাকেট, দামি মোবাইল ফোন, ফোন নম্বর লেখা একাধিক কাগজের টুকরো, সিমকার্ড ভর্তি একটি প্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে বলে NIA সূত্রে খবর। এদিকে NIA-র হাতে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি গ্রেফতার হওয়ার পরই, এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। 


NIA সূত্রে দাবি, এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে দিনের পর দিন বিস্ফোরক সরবরাহে সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে এই ইসলাম চৌধুরীর। কিন্তু কেন তাঁর বিরুদ্ধে এতদিন পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিল না, তাও খতিয়ে দেখবেন NIA-র আধিকারিকরা।