মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীত হালদার ও সমীরণ পাল, কলকাতা : এক সময় প্রায়ই র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠত পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর এনআইটি (Durgapur NIT) ও হাওড়ার শিবপুর আইআইইএসটি (Shibpur IIEST) ক্য়াম্পাসে। তবে কড়া পদক্ষেপে র‍্যাগিং মুক্ত হয়েছে রাজ্য়ের এই দুই নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অন্য় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পারলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের ক্য়াম্পাস থেকে কেন দূর করা যায় না র‍্যাগিং ? তোলপাড় ফেলে দেওয়া পড়ুয়া মৃত্য়ুর ঘটনায় উঠছে প্রশ্ন। 


উজ্জ্বল ভবিষ্য়ৎ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় পড়তে এসে অকালে ঝরে গেছে প্রাণটাই। আরও মারাত্মক বিষয় হল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে এই পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় জোরাল হচ্ছে সেই র‍্যাগিংয়ের তত্ত্বই !


যাদবপুরে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ (Ragging Allegation at Jadavpur University) একেবারেই নতুন নয়। ২০১১ সালে র‍্যাগিং প্রতিরোধে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যে অ্য়ান্টি র‍্যাগিং কমিটি তৈরি করেছিল, তার সদস্যের বিরুদ্ধেই র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে। ২০১৩ সালে র‍্যাগিংয়ে অভিযুক্ত দুই ছাত্রর শাস্তি মকুবের দাবিতে প্রায় ৫০ ঘণ্টা ঘেরাও থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরা। গতবছর নভেম্বরেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষভাবে সক্ষম এক ছাত্রকে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে।


এই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয় ক্য়াম্পাস থেকে র‍্যাগিং নামে অসুখ দূর করা যায় না কেন ?
এপ্রসঙ্গে অনেকেই টেনে আনছেন রাজ্য়ের নামী আরও দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথা। শিবপুর IIEST এবং দুর্গাপুর NIT। একটা সময় এই দুই প্রতিষ্ঠানেও র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠত। কিন্তু, বর্তমানে এই দুই অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্য়াম্পাস র‍্যাগিং-মুক্ত।


দুর্গাপুরের ন্য়াশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে এক দশক আগে র‍্যাগিং, মারধর, আত্মহত্য়ার মতো ঘটনা প্রায় ঘটত।কর্তৃপক্ষের দাবি, কলেজ ক্য়াম্পাস ও হস্টেলে সিসিটিভি ক্য়ামেরা লাগানো, প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা যেখানে থাকে, সেখানে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের যাওয়া নিষিদ্ধ করা এবং পড়ুয়াদের সমস্য়া বুঝতে নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের মাধ্য়মে র‍্যাগিং নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। দুর্গাপুর এনআইটি-র ডিন অফ স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার রজত মহাপাত্র বলেন, 'পড়ুয়াদের সমস্য়া বুঝতে নিয়মিত কাউন্সিলিং করা হয়। কাউন্সিলিং সেনাটের নিয়ে গিয়ে কাউন্সিলিং করা হয়। এবার হস্টেলে গিয়ে কাউন্সিলিং করা হবে।'


শিবপুরের IIEST কর্তৃপক্ষেরও দাবি, নিয়মিত পদক্ষেপে র‍্যাগিং আটকাতে সফল হয়েছেন তাঁরা। 


পড়ুয়া মৃত্য়ুর এই তোলপাড় ফেলে দেওয়া ঘটনার পর কি শিবপুর, দুর্গাপুরের মতো, র‍্যাগিং বন্ধে উদ্য়োগী হবে যাদবপুর?