পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: যাদবপুরকাণ্ডে তন্ন তন্ন করে সূত্র খুঁজছে পুলিশ। যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা ১১ জনের নাম। ওইদিন তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ধৃত জয়দীপ ঘোষ। এরই মধ্যে পুলিশের  স্ক্যানারে এসেছে এক পড়ুয়ার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট।

হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটে কী তথ্য?


কী ঘটেছিল ওই রাতে? তা জানতে ইতিমধ্যেই ধৃতদের আলাদা আলাদা করে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেছে পুলিশ। এছাড়া হস্টেলের এক আবাসিক ছাত্রের ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ৯ অগাস্ট রাতে নদিয়ার হতভাগ্য পড়ুয়ার সঙ্গে ঠিক কী হয়েছিল তা নিয়ে ওই ছাত্র হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট করেছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। কী কথোপকথন হয়েছিল, তা জানতেই রবিবার রাতে ওই পড়ুয়ার মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এবার সেই চ্যাট থেকে কী চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে, তারই অপেক্ষা। 


অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ধৃত জয়দীপ ঘোষকে জেরা করে পুলিশ আরও ১১ জনের নাম জানতে পেরেছে বলে খবর। পুলিশ সূত্রে খবর,  তাদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাদেরও বয়ান নিতে চায় পুলিশ। কে এই জয়দীপ ? যাদবপুরের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিভাগের প্রাক্তনী জয়দীপ ঘোষ বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যন্ত প্রভাবশালী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ধৃতদের জেরা করে এই তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। ২০২১-এর পাস করা জয়দীপ ২০১৯-’২০ সালে আর্টসের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হেরে যান। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বাসিন্দা জয়দীপ বর্তমানে বিক্রমগড়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। 

এর পাশাপাশি, সোমবার থেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বভার নিতে চলেছেন নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। রবিবার ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন তিনি। ঘুরে দেখেন ক্যাম্পাস। পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় যে গাফিলতি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না, তা তিনি ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দেন নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্য। যদিও সঙ্কটকালীন পরিস্থিতিতে তাঁর নিয়োগ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। 


অন্যদিকে সোমবারই যাদবপুরকাণ্ডে ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে তলব করে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। সূত্রের খবর, ডিনের কাছে জানতে চাওয়া হবে, ওইদিন রাতে ফোন পেয়ে তিনি কী করেছিলেন। কাকে ফোন করেছিলেন এবং কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।  


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের অভিযোগ, অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের শাখা সংগঠন, অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসঙ্ঘের রাজ্য কমিটির সভাপতি। এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূলের অভিযোগ, যাদবপুরের এই সঙ্কটকালে বিজেপির অনুগত ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল।