পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : যাদবপুরকাণ্ডে ( Jadavpur University ) এবার পুলিশের স্ক্যানারে ডিন অফ স্টুডেন্টস ও হস্টেল সুপার। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনার দিন রাত ১০টা ৫ মিনিটে এক ছাত্র ফোন করেছিল ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে। জানিয়েছিল, 'একটি ছাত্রের সমস্যা হচ্ছে, তাঁকে ক্যাম্পাস থেকে বলা হচ্ছে - হস্টেলে থাকিস না, হস্টেলে থাকলে ঝাঁপ মারতে পারে।' 


সেদিন রাতে ডিন অফ স্টুডেন্টস সেই কথা জানিয়ে ফোন করে বিষয়টি দেখতে বলেন হস্টেল সুপারকে। পরের ফোন রাত ১২টায়। তখন ডিন অফস্টুডেন্টস জানতে পারেন, এক ছাত্র পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, ছাত্রের ফোন পেয়েও কেন হস্টেলে যাননি তিনি? হস্টেল সুপারই বা ডিন অফ স্টুডেন্টস-এর ফোন পেয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন? ডিন অফ স্টুডেন্টস বা হস্টেল সুপার সক্রিয় হলে ছাত্রের এমন মর্মান্তিক পরিণতি আটকানো যেত বলে মনে করছে পুলিশ। 

পুলিশের দাবি, সুপার জানান, ছাত্রটির নাম দেখেই তিনি যোগাযোগ করেননি। কারণ সত্যব্রত নামের ওই ছেলেটির ব্যবহার নাকি অত্য়ন্ত খারাপ ছিল। তাছাড়া ওই সময় তিনি হস্টেলের তিন বা চার তলায় তিনি যাননি কারণ, তাঁর উপরই হস্টেলের ছেলেরা চড়াও হতে হতে পারে' 


ছাত্র মৃত্যুর পরপরই ডিন অফ স্টুডেন্টস দাবি করেছিলেন, ঘটনার আগে তাঁর কাছে একটি ফোন এসেছিল। পুলিশ সূত্রে
দাবি করা হচ্ছে, সেই ফোনটি করেছিলেন সত্যব্রত। শুক্রবার রজত রায় বলেছিলেন,' একজনই আমাকে ফোন করে ডেকেছিল ১০টা ৫-এ। একটি ছাত্রের সমস্যা হচ্ছে, তাঁর পলিটিসাইসিং হচ্ছে। আমি গুছিয়ে বলতে বলি। তাঁকে ক্যাম্পাস থেকে বলা হচ্ছে - হস্টেলে থাকিস না, হস্টেলে থাকলে ঝাঁপ মারতে পারে। তখন বলি, তুমি কী বলছ? এটা কি সুপারকে জানিয়েছ? বলল না। ১০.০৮ মিনিটে আমি সুপারকে ফোন করি। বলি, ট্রু কলারে একটি ছেলের নাম দেখতে পাই। ওকে চেনেন? বলল হ্যাঁ। বলি ওকে জিজ্ঞাসা করুন ওর কী সমস্যা আছে। ১২.৭-এ পরবর্তী ফোন আসে। তার মাঝে কেউ ফোন করেনি। হস্টেল সুপারই জানালেন একটি ছেলে পড়ে আছে।' 


তাহলে কি সত্যব্রত ডিন অফ স্টুডেন্টসকে ফোন করে সতর্ক করে দিয়েছিলেন? সেটাই যদি হয়, তাহলে তাঁকে গ্রেফতার করা হল কেন? পুলিশ সূত্রে দাবি, আসলে এই ফোন করাটাও একটা চিত্রনাট্যের অংশ। যাতে অন্য়ের ঘাড়ে দোষ চাপানো যায়। গোটাটাই পরিকল্পিত। 


কারণ, এর আগে ভাইরাল হওয়া একটি চিঠিতে দেখা যায়, রুদ্র নামে এক পড়ুয়াকে গোটা বিষয়টির জন্য দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু পরে জানা যায়, চিঠিটির বয়ান ওই মৃত পড়ুয়ার লেখা নয়, লেখা আরেক ধৃত মনোতোষের। মৃত পড়ুয়াকে দিয়ে চিঠিটি জোর করে সই করানো হয়েছিল! এই দিকগুলির যোগসূত্র খুঁজতে সত্যব্রতকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা।