কলকাতা: যাদবপুরে পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এবার জানা গেল, ঘটনার দিন খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু মেন হস্টেলের গেট ভিতর থেকে তালাবন্ধ ছিল। তার জেরে শত চেষ্টা করেও ভিতরে ঢুকতে পারেনি পুলিশ। এর পর রাত পৌনে ১২টা নাগাদ হস্টেল থেকে একটি হলুদ রংয়ের ট্যাক্সি বেরোতে দেখা যায়। সেই ট্যাক্সিকে অনুসরণ করে নিকটবর্তী কেপিসি হাসপাতালে পৌঁছয় পুলিশ। সেখানেই হদিশ মেলে মৃত পড়ুয়ার। (Jadavpur University)


কেপিসি হাসপাতালে পৌঁছতেই পুলিশ গোটা বিষয়টি জানতে পারে বলে খবর। আর এই বিষয়টি সামনে আসতেই নতুন করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তথ্যপ্রমাণ গোপন করতেই কি পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি হস্টেলে? কারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল? সেইসময় হস্টেল সুুপার কি উপস্থিত ছিলেন? ধৃত প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী, দুই দীপশেখর দত্ত এবং মনোতোষ ঘোষকে জেরা করে এই সব প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।  


আরও পড়ুন: Jadavpur University: সংগঠিত অপরাধ, মানসিক নির্যাতন! যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুতে গ্রেফতার আরও দুই, সৌরভকে জিজ্ঞাসাবাদেই মেলে তথ্য


তাই গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল কিনা, উঠছে প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, প্রথমে থানার ল্যান্ডলাইন নম্বরে একজন ফোন করে জানান যে, বারান্দা একজন ছাত্র পড়ে গিয়েছে। এর পর ফোর্স নিয়ে যখন পুলিশ পৌঁছয়, দেখা যায় ভিতর থেকে তালাবন্ধ মেন হস্টেলের গেট। বার বার ডাকাডাকি করেও সাড়া মেলেনি। তার পরও প্রায় ১৫ মিনিট বাইরে দাঁড়িয়েছিল পুলিশ। 


এর পর, পৌনে ১২টা নাগাদ কয়েক জন পড়ুয়া ট্যাক্সিতে কাউকে চাপিয়ে বের হন। সেই ট্যাক্সিকে অনুসরণ করে কেপিসি পৌঁছয় পুলিশ। সেখানেই কিশোর পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পারে পুলিশ। পুলিশকে কেন হস্টেলে ঢুকতে দেওয়া হল না, কার মাথা থেকে এসব বেরিয়েছিল, কে কে উপস্থিত ছিলেন সেখানে, প্রশ্ন উঠছে। সেই নিয়ে সৌরভ এবং অন্য দুই ধৃতদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 


পড়ুয়ার মৃত্যুতে প্রাক্তনী-সহ যাদবপুরের আরও দুই পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত দীপশেখর দত্ত অর্থনীতির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং অপর ধৃত মনোতোষ ঘোষ সোশিওলজি দ্বিতীয়  বর্ষের পড়ুয়া। পুলিশ সূত্রে খবর, মনোতোষেরই গেস্ট পরিচয়ে হস্টেলে থাকছিলেন মৃত পড়ুয়া। মনোতোষ এবং দীপশেখরও মৃত পড়ুয়াকে মানসিক নির্যাতন করেন বলে পুুলিশ সূত্রে খবর।


ধৃত প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে জেরা করে ওই দু'জনের নাম জানা যায়। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের আজ ভোরে দুই পড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, হস্টেল থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরিতে মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, কোনও ঘটনাকে কেন্দ্র করে কি প্রবল মানসিক চাপ তৈরি করা হয়েছিল ওই পড়ুয়ার উপর, কী সেই চাপ, কোন ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল, আর কারা জড়িত ছিল, ধৃত তিন জনকে জেরা করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।