কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্য়ুতে জোরাল হচ্ছে ব়্য়াগিংয়ের তত্ত্ব। আর সেই প্রেক্ষাপটেই চাঞ্চল্য়কর দাবি করেছেন মৃত পড়ুয়ার সহ-আবাসিক, প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়া, যিনি সেই রাতের সাক্ষী। নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁর পরিচয় গোপন রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। (JU Student Death)
ওই পড়ুয়ার দাবি, মৃত পড়ুয়ার সঙ্গে তিনিও একদিন গিয়েছিলেন হস্টেলের ৭৯ নম্বর ঘরে। রাত সাড়ে ৩টে পর্যন্ত সেখানে দাদাদের কাছে দিতে হয়েছিল নিজের পরিচয়। বাংলার ছাত্র হওয়ায়, অশ্লীল শব্দের ভাবসম্প্রসারণ করতে বলা হয়েছিল মৃত পড়ুয়াকে। এছাড়াও কটূক্তি শুনতে হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। (Jadavpur University)
প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশও। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন রাত ৮টা পর্যন্ত সুস্থ এবং স্বাভাবিকই ছিলেন মৃত পড়ুয়া। এর পর মেন হস্টেলের একটি ঘরে তাঁর কাউন্সেলিং হয়। সেই কাউন্সেলিংয়ে কয়েকজন পড়ুয়ার সঙ্গে হাজির ছিলেন যাদবপুরের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীও।
পুলিশ সূত্রে খবর, এর পর হস্টেলের একদল পড়ুয়া, সঙ্গে সৌরভ-সহ-প্রাক্তনীরা মৃত পড়ুয়াকে উদ্দেশ্য করে অশালীন মন্তব্য এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে অভব্য আচরণ শুরু করেন। রাত যত গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে অত্যাচারের মাত্রা। এর মধ্যেই অসহায় ওই কিশোর, কয়েকজন পড়ুয়ার সামনেই তিন তলার বারান্দা থেকে নীচে পড়ে যান।
পড়ুয়ার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও বার বার প্রশ্ন উঠছে। কিছু একটা ঘটছে বলে ফোন যাওয়ার পরও কেন কেউ খোঁজ নিয়ে দেখলেন না, সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না কেন, এমন একাধিক প্রশ্ন সামনে আসছে। এতকিছুর পর শনিবার পুরোপুরি ছুটির মেজাজ ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। অরবিন্দ ভবনে প্রশাসনিক আধিকারিকদের ঘর খাঁ-খাঁ করছিল। সহ উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, কেউই আসেননি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফোন পেয়ে পুলিশ পৌঁছলেও, যাদপুর হস্টেলের মেন গেট খোলা হয়নি। ভিতর থেকে বন্ধ ছিল মেন গেট। মাঝরাতে হস্টেল থেকে হলুদ ট্যাক্সি বেরোতে দেখে অনুসরণ করে পুলিশ। ট্যাক্সিকে অনুসরণ করে কেপিসি হাসপাতালে পৌঁছে খোঁজ মেলে মৃত পড়়ুয়ার। তাহলে কি প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হচ্ছিল, তার জন্যই কি ঢুকতে দেওয়া হয়নি পুলিশকে, হস্টেলে কি সেই সময় উপস্থিত ছিলেন সুপার? উঠছে প্রশ্ন।