রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : একসঙ্গে ১৩ জন রোহিঙ্গা গ্রেফতার (Rohingya Arrested)। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের (New Jalpaiguri Station) জিআরপি (GRP) তাদের গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে ৬ জন শিশু রয়েছে বলে খবর। ধৃতরা মায়ানমারের বাসিন্দা। 


জানা গেছে, জম্মু ও দিল্লি থেকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে এনজেপি স্টেশনে পৌঁছেছিল ওই ১৩ জন। তাদের অসমে যাওয়ার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী শুক্রবার বিকেলে তারা স্টেশনে অপেক্ষা করছিল। তাদের দেখে সন্দেহ হয় জিআরপির। আটক করে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। রাতেই তাদের ফরেনার্স অ্যাক্টে গ্রেফতার করা হয়।


ধৃতদের নাম- আব্দুল রকিম, মহম্মদ হরিশ, নুর ইসলাম, মনুয়ারা বেগম, সামদা বেগম, মহম্মদ আয়ুব, মহম্মদ আবদুল্লা। এছাড়া রয়েছে  ছয় শিশু। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, অসম থেকে ত্রিপুরা হয়ে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল দলটির।


এর আগে ২০২১ সালে উত্তর ২৪ পরগনা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ২ রোহিঙ্গাকে। এটিএসের হাতে গ্রেফতার হয় তারা। রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের ভারতে ঢুকতে জাল নথি তৈরির অভিযোগ ওঠে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ২টি পার্সপোর্ট, ৮টি আধার কার্ড ও ৩টি ভোটার কার্ড। ধৃতদের থেকে মায়ানমার সরকারের নথিও উদ্ধার হয় বলে দাবি উত্তরপ্রদেশের এটিএসের। 


প্রসঙ্গত, বছর পাঁচেক আগে মায়ানমারে রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশে সামরিক অভিযান চালায় মায়ানমার সেনা। এর ফলে, প্রায় ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিম সেই দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সামরিক অভিযানের নামে অসংখ্য রোহিঙ্গা মহিলা ও মেয়েকে গণধর্ষণ করেছে মায়ানমার সেনা, এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংগঠন। সংগঠনের প্রধান গবেষক স্কাই হুইলার বলেন, রোহিঙ্গা উচ্ছেদ অভিযানে ধর্ষণ একটা বড় হাতিয়ার ছিল মায়ানমার সেনার। সামরিক বাহিনীর এই বর্বরোচিত আচরণের ফলে বহু মহিলা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন।


এদিকে একাধিক সময়ে ভারতে রোহিঙ্গা-অনুপ্রবেশের অভিযোগ ওঠে। ২০১৯ সালে এক মহিলা সহ পাঁচ সন্দেহভাজন রোহিঙ্গাকে গুয়াহাটি স্টেশনে গ্রেফতার করেছিল রেলওয়ে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ‘ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর দিল্লি’-র রিফিউজি সার্টিফিকেট। এছাড়াও তাদের কাছে ছিল জাল আঁধার কার্ড, সিগারেট, সাদা কফি, ও মায়ানমারের তৈরি বিভিন্ন ফল ও মিষ্টির প্যাকেট।


সেই সময় অসমের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা বলেছিলেন, কিছু কায়েমি স্বার্থান্বেষী মানুষ রোহিঙ্গাদের অসমে আনার চক্র তৈরি করেছে। রোহিঙ্গাদের নাম করে টাকা আদায় করাই এদের উদ্দেশ্য।