রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা ব্লকের সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভগতপুর চা-বাগানে ভালুকের আতঙ্ক। শনিবার সকালে যখন চা-বাগানে কয়েকজন শ্রমিক স্প্রে করার কাজ করছিলেন, ঠিক সেই সময় ভালুকের মুখোমুখি পড়ে যান তাঁরা। ভালুকটি তেড়ে আসতেই তাঁরা স্প্রে-র মেশিনপত্র ফেলে পালিয়ে যান। এরপরেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান খুনিয়া, ডায়না, মাল, বিন্নাগুড়ি, রামসাই, বীরপাড়া সহ বিভিন্ন রেঞ্জের বনকর্মীরা। চলে আসে নাগরাকাটা থানার পুলিসও। গত কয়েকদিন ধরে ওই চা-বাগানে নজরদারি চালাচ্ছিল বন দফতর। শেষপর্যন্ত ভালুকটিকে খুঁজে বের করে ঘুমপাড়ানি গুলি ব্যবহার করে কাবু করতে সক্ষম হয় বন দফতর। দুপুর থেকে চেষ্টা, বনকর্মী থেকে পুলিশের সতর্ক পাহারা। অবশেষে বিকেলে জালবন্দি হল ভালুক।


বুধবারের পর শনিবার। দু’দিনের ব্যবধানে ডুয়ার্সের চা-বাগানে ফের ভালুকের হানা। তবে বুধবার মেটেলি চা-বাগানে ভালুকের মৃত্যু হলেও, শনিবার বন দফতেরর তৎপরতায় রক্ষা পায় ভালুকটি। এদিন কাজ করার সময় ভালুকটিকে দেখতে পান চা-বাগানের কর্মীরা। আতঙ্ক ছডিয়ে পড়ে এলাকায়। দ্রুত এলাকায় পৌঁছন খুনিয়া, ডায়না-সহ একাধিক রেঞ্জের বনকর্মীরা। পুলিশ এসে এলাকা ঘিরে ফেলে। ভিড় করেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। এদিকে লোকজন, আওয়াজে চা-বাগানে সেঁধিয়ে যায় ভালুকটিও। দীর্ঘ চেষ্টার পর তাকে জালবন্দি করা যায়।


খুনিয়ার রেঞ্জার রাজকুমার লায়েক জানিয়েছেন, ‘চা-বাগানে ভালুক ঢুকেছিল। ট্রাঙ্কুলাইজ করা হয়েছে। জঙ্গলে ছাড়া হবে। মানুষ সচেতন থাকুক।’


বন দফতর সূত্রে খবর, ভালুকটিকে নাগরাকাটার নেওড়াভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে ছাড়া হবে।


ডুয়ার্সের জঙ্গলে হাতি, বাইসন, চিতাবাঘের দেখা মেলে। কিন্তু ভালুক কোথা থেকে এল? বন দফতর সূত্রে খবর, ভুটানের জঙ্গল থেকে সম্ভবত ভালুকটি ঢুকেছিল। পাহাড় ফাটিয়ে রাস্তা তৈরি-সহ একাধিক কারণে বাসস্থানের অভাব হওয়ায় এভাবে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে ভালুক। বারবার লোকালয়ে ভালুক ঢুকে পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত। তবে বন দফতর এই এলাকায় নিয়মিত নজরদারি চালানোর আশ্বাস দিয়েছে।