রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: তিস্তার জলে বানভাসি জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) একাধিক এলাকা। জলবন্দি ক্রান্তি ব্লকের বাসুসুবা গ্রামের হাজার খানেক মানুষ। জলের তলায় চলে গিয়েছে চাষের জমি। তার জেরে ফসল নষ্টের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ১১ বছর ধরে তাঁরা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ বা স্লুইস গেট তৈরির দাবি জানিয়ে আসছেন কিন্তু দাবি পূরণ হয়নি।
উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি: ফুঁসছে তিস্তা, নদীর জল বইছে রাস্তার ওপর দিয়ে। অবিরাম কাদার স্রোত। চঞ্চলা তিস্তার এমন বিধ্বংসী রূপ সাম্প্রতিককালে দেখেনি পাহাড়। সিকিমের চুংথামে মেঘ ভাঙা বিপর্যয়ের জেরে বিধ্বস্ত কালিম্পং সহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। আচমকা বিদসীমার ওপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে তিস্তা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিস্তা পারের বিভিন্ন জনবসতি। কালিম্পঙের পার্বত্য এলাকায় তিস্তা বাজার থেকে কালিঝোড়া, সেবক, গজলডোবাতে রাতারাতি ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে জলস্তর। ভয়াবহ দুর্যোগে বিপর্যস্ত কালিম্পং। জলের তোড়ে ধসে গেছে রাস্তা। বিপর্যস্ত তিস্তা বাজার, রাম্পু সহ বিভিন্ন এলাকা। শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং এবং দার্জিলিং যাওয়ার বিকল্প রাস্তার ওপর দিয়েই বইছে জল। পুরোপুরি বন্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। কালিম্পঙের মেল্লিতে রাস্তার ওপর জমে গিয়েছে কয়েক ইঞ্চি পুরু কাদার স্তর। জলপাইগুড়িতে তিস্তা নদী সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। তিস্তা সেতুর ওপর কাউকে না দাঁড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করেছে সেচ দফতর। সংরক্ষিত এলাকায় জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা দফায় দফায় জল ছাড়া হচ্ছে তিস্তা ব্যারাজ থেকে। তিস্তা সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
বাংলায় আজও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছে নিম্নচাপ। পাশাপাশি, সিকিম থেকে ছত্তীসগঢ় পর্যন্ত রয়েছে নিম্নচাপ অক্ষরেখা। এর টানে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকছে বঙ্গোপসাগর থেকে। সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি। এর মধ্যেই আজও অতি ভারী বৃষ্টির জন্য লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কালিম্পঙে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে দার্জিলিং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদা জেলায়। অতি বৃষ্টির জেরে ফের ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে। জলপাইগুড়ির ক্রান্তি ব্লকের বাসুসুবা গ্রামে বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি যেন মস্ত নদী। চাষের খেত জলে ডুবে যাওয়ায় ফসল নষ্টের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ভেলায় চড়ে চলছে যাতায়াত। রাতের ঘুম কেড়েছে তিস্তা। ব্যারাজ থেকে জল ছাড়লে আরও কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হবে, তা ভেবেই পাচ্ছেন না তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: Governor: 'আমি পর্যটক, লোকেদের অবস্থা দেখতে এসেছি' খোঁচা রাজ্যপালের