রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: মাল নদীতে কালীপুজোর বিসর্জন (Kali Puja) নিয়ে বাড়তি সতর্কতা নিল প্রশাসন। প্রতিমা ঘাটে নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দিচ্ছেন সিভিক ভলান্টিয়াররাই (Idol Immersion)। নদীর কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে কাউকেই। 


কালীপুজোর বিসর্জন ঘিরে বিশেষ ভাবে সতর্ক প্রশাসন


এই মাল নদীতেই দুর্গাপুজোর বিসর্জনে, হাড় হিম করা অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন স্থানীয়রা (Jalpaiguri News)। হড়পা বানে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয় আট জনের। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে, এবার কালীপুজোর বিসর্জনে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে প্রশাসন। 


মাল নদীর পাশে, পুলিশের তরফে লাগানো হয়েছে নিষেধাজ্ঞার বোর্ড। ফলে নদীর কাছে যেতে পারছেন না কোনও পুজো উদ্যোক্তা। সিভিক ভলান্টিয়ারাই প্রতিমা ঘাটে নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দিচ্ছেন।


আরও পড়ুন: Bhai Phota 2022: অগ্নিমূল্য ইলিশ, পিছিয়ে নেই ভেটকি, পাবদা, চিংড়িও, ভাইফোঁটার বাজারে হাত ছোঁয়ানোই দায়


বুধবার সকালে ওই জায়গা ঘুরে দেখেন মাল পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা। তিনি বলেন, "শিক্ষা নিয়ে এই ব্যবস্থা। সিভিকরা নিরঞ্জন করছে।" স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, বিসর্জনের জায়গায় তৈরি রাখা হচ্ছে NDRF ও অন্যান্য উদ্ধারকারী দলকে। যদিও আগে থেকে সতর্ক না হলে এমনই হয় বলে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। 


দশমীর রাতে দুর্যোগ। বিসর্জনে বিভীষিকা। প্রতিমার সঙ্গে প্রাণের বিসর্জন। চোখের নিমেষে, আনন্দ বদলে গিয়েছিল হাহাকারে। বিসর্জন দেখতে, মাল নদীর পাড়ে ভিড় করেছিলেন কাতারে কাতারে স্থানীয় বাসিন্দা। অনেকে নদীখাতেও নেমে যান। এর মধ্যেই আচমকা ফুঁসে ওঠে মাল নদী। নদীখাত দিয়ে হুড়মুড়িয়ে জল আসতে শুরু করে। কেউ কিছু বোঝার আগে, জলের তোড় ভাসিয়ে নিয়ে যায় অনেককে। অনেকে বাঁচার জন্য পাশের লোককে আঁকড়ে ধরেন। ফলে ভেসে যান তাঁরাও।


দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের সময় এর আগে বিপত্তি ঘটে


কেউ কেউ কোনওমতে দড়ি ধরে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করেন। অনেকে তা-ও পারেননি। তাদের ভাসিয়ে নিয়ে চলে যায় ততক্ষণে রুদ্রমূর্তি ধারণ করা মাল নদী। বিসর্জন দেখতে এসে, জলপাইগুড়ির মাল নদীতে হড়পা বানে ভেসে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় ৮ জনের।


 উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে সম্প্রতি মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হড়পা বানে মৃতদের পরিবারের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, "প্রশাসনিক স্তর থেকে স্থানীয় মানুষ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী রাতভর উদ্ধার কাজ করেছেন। তাই ৪৫০ জনকে বাঁচানো গিয়েছে। আমি তাঁদের প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এইভাবে পাড়ার ছেলেমেয়েরা এগিয়ে এলে আমরা প্রাণ রক্ষা করতে পারি।''