রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা এবং তার পর থেকে লাগাতার খুনের হুমকির অভিযোগ। দিনের পর দিন এই অশান্তি সইতে না পেরে ময়নাগুড়িতে (Moynaguri News) এক নাবালিকার গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ সামনে এল। ওই কিশোরীর অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি রয়েছে সে। এই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা নাবালিকাকে!
জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri News) ময়নাগুড়ির ধর্মপুর এলাকার ঘটনা। নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে একা ছিল মেয়েটি। সেই সুযোগে পাড়ার এক যুবক ঢুকে পড়েন। মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। বাধা দিলে ছিঁড়ে নেয় জামা-কাপড়ও। উপায় না দেখে চিৎকার করতে শুরু করে ওই নাবালিকা। তাতেই অভিযুক্ত পালিয়ে যান বলে দাবি পরিবারের।
বাড়ি ফিরে মেয়ের কাছ থেকে গোটা ঘটনা জানতে পেরে ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করে তার পরিবার। কিন্তু অভিযুক্ত যুবক জামিন হাসিল করে নেয় বলে অভিযোগ। তার পর থেকে অবিযোগ প্রত্যাহারে চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। বুধবার দুপুরে মুখ ঢাকা অবস্থায় দুই যুবক মেয়েটির বাড়িতে উপস্থিত হন বলে অভিযোগ। পরিবারের অভিযোগ, মেয়েটিকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে জোর করা হয়। অন্যথায় মেয়েটিকে এবং তার পরিবারের সকলকে খুন করা হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: CBI in Hanskhali : "স্যার, বাঁচতে চাই", সিবিআইয়ের কাছে কাতর আবেদন গ্রামবাসীর; এখনও আতঙ্কে হাঁসখালি
বাড়ির লোকজনকে সে কথা জানানোর পর বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়েটি গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হতে যায় বলে জানিয়েছে পরিবার। কোনও রকমে তাকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রাজ্যকে তোপ বিজেপি-র
নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত যুবকের দাদা তৃণমূল সমর্থক। এই ঘটনায় তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলে বিজেপি-র জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, “গোটা রাজ্যে যা হচ্ছে, এখানেও ঠিক তাই হল। এক মাসের বেশি সময় ধরে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল না। উল্টে এই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে গেল। তার জেরে এই ভয়ঙ্কর পরিণতি। এই সরকারের কাছে কিছু চেয়ে কোনও লাভ নেই। এখানে প্রশাসন বলে কিছু নেই। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।“
এই ঘটনায় জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে বলে গত মার্চ মাসে অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। এরপর পুলিশ অভিযুক্তের খোঁজ চালাচ্ছিল। তার মধ্যে অভিযুক্ত আদালত থেকে জামিন নিয়ে নেয়। এর পর গতকাল নাবালিকাকে হুমকি দেওয়া হয়। আজ নাবালিকা আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তার পরিবার ফের অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিজয় রায় নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” এই বিষয়ে তৃণমূলের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।