জলপাইগুড়ি: '১০০ জনের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ হলেই রাস্তা হবে..', রাজগঞ্জের বিডিওর মন্তব্যে তোলপাড়। রাস্তার দাবিতে রাজগঞ্জে অবরোধ, ঘটনাস্থলে বিডিওর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।

আরও পড়ুন, TMCP-র প্রতিষ্ঠা দিবসে কেন পরীক্ষা? এবার সরকারের হস্তক্ষেপ ! দিন বদল চেয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি

'বিনামূল্যে পানীয় জল, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাচ্ছেন। সময় হলে রাস্তাও হবে, এখন বাড়ি যান', বিডিওর এই বক্তব্যের পরই ফুঁসে ওঠেন মহিলারা। যদিও বিডিও-র বক্তব্যে চুপ থাকেননি স্থানীয় মহিলারা। 'চাই না লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, আগে রাস্তা করে দিন', বিডিও-কে মুখের উপর বলে দেন তাঁরা। এরপর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পাল্টা বিডিও প্রশান্ত বর্মন বলেন, 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার না লাগলে চলে আসবেন, নাম কেটে দেব। ১০০ মহিলার নাম কাটলে অনেক রাস্তা করা যাবে।' বলাইবাহুল্য, বিডিও-র বক্তব্যে চরম ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।

মূলত, রাজ্যের জেলায় জেলায় বেহাল রাস্তার ছবি উঠে আসছে। এরমধ্যে বর্ষায় সেই ভোগান্তি গিয়েছে আরও চরমে। বিশেষ করে, খারাপ রাস্তার জেরে হাসপাতালে যাওয়ার সময় রোগীদের চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। এবার রাজগঞ্জের শিকারপুর পঞ্চায়েতের নর্থ বেঙ্গল ফার্ম গ্রামের বেহাল রাস্তা ঘিরে উঠেছে অভিযোগ। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে অবরোধ-বিক্ষোভ দেখালেন এবার এলাকাবাসীরা। অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন রাজগঞ্জের পুলিশ, বিডিও। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিডিও-র বক্তব্যে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।  

সম্প্রতি, পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের পাকুড়সেনি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝোপগেরিয়া এলাকায় এমনই ভোগান্তির মুখে পড়েছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা। সেখানে ঢালাই রাস্তা মুখ ঢেকেছিল কাদায়। প্রসব যন্ত্রণা ওঠা রোগী নিয়ে রাস্তায় ফেঁসে গিয়েছিল গাড়ি। ঘটনার দিন, সকাল থেকেই অসম্ভব প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন ওই সন্তান সম্ভবা মহিলা। বাড়ির লোকজন ছোট মারুতি গাড়ি দেখে তাঁকে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল হাসপাতালে। গাড়িতে চাপিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার সময় মাঝপথে ঘটে বিপত্তি। শেষে রাস্তাতেই সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন মা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘটনার পরেও  একই ছবি দেখা গিয়েছিল মুর্শিদাবাদের সুতিতে। সুতির ১ নম্বর ব্লকে বেহাল রাস্তার জেরে, খাটিয়ায় চাপিয়ে হাসপাতালের পথে নেওয়া হয়েছিল অন্তঃসত্ত্বাকে। মূলত, বর্ষার সময় রাস্তায় জমে থাকা মাটি কাদায় পরিণত হয়। গ্রামীণ রাস্তা ক্রমশই মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০২৪ সালে এই এলাকায় রাস্তা তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছিল একটি সংস্থাকে। দেড় বছরে এক মিটার রাস্তাও তৈরি করেনি সেই সংস্থা বলে উঠেছিল অভিযোগ।