রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : ১৯৯৬ সালে আলিপুর চিড়িয়াখানাতেই শিবা নামে একটি বাঘকে মালা পরাতে এনক্লোজারে ঢুকে পড়েন এক ব্যক্তি।  সেই ঘটনার স্মৃতি আজও জ্বলজ্বলে। বাঘের কামড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল ওই ব্যক্তির। এরপরও এনক্লোজারে ঢুকে বাঘের আক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা আরও ঘটেছে। এ যেন আগুন দেখে পতঙ্গের ছুটে যাওয়ার মতো। এই নেশা যে প্রাণও কেড়ে নিতে পারে, তাও অজানা নয়। তবু বিপদির সঙ্গে পাঞ্জা লড়া আর সেলফি তোলার নেশা ! ফের একবার জীবন-মৃত্যুর মাঝে এনে ফেলল জলপাইগুড়ির বাসিন্দাকে। 


সাপের সঙ্গে সেলফি
অজগর সাপ গলায় পেঁচিয়ে উল্লাস ! সেলফি তোলার হিড়িক ! আর অজগর কি ছেড়ে দেবে ? অজগরও  ছোবল বসাল দুই ব্যক্তিকে। মুরগি খেতে জলপাইগুড়ির এক বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল প্রায় ১০ ফুট লম্বা অজগর সাপ। 
আর সেই সাপ উদ্ধারের জন্য বন দফতর থেকে কর্মীরা না আসায়, কয়েকজন যুবক মিলে  নিজেরাই ধরে ফেললেন সাপ টিকে। স্থানীয় সূত্রে এমনটাই দাবি।  এরপর সেই অজগর সাপ কে গলায় পেঁচিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে গয়েরকাটা রেঞ্জ অফিসের সামনে এসে হাজির হন তাঁরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিশাল এক অজগর সাপকে কাঁধে তুলে উল্লাস শুরু করেন। এরকম কাণ্ড দেখে হতবাক সর্প বিশেষজ্ঞ থেকে পরিবেশ প্রেমীরা। 


সাপ নিয়ে বেনজির উল্লাস
অজগর সাপ টিকে নিয়ে রীতিমতো উল্লাস করেন তাঁরা।  সেল্ফি তোলার হিড়িক পড়ে যায় গয়েরকাটা শহরে। জানা যায়, গয়েরকাটার হিন্দু পাড়া এলাকায়  বাসন্তী কুজুরের  বাড়িতে মুরগি খেতে ঢুকেছিল ওই  অজগরটি। এলাকার  যুবকেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাপটিকে ধরতে গেলে জঞ্জালু রায়ের ও কুসুম কলুনিয়া নামে  দুই যুবককের হাতে কামড় বসিয়ে দেয় ওই অজগর। তবুও প্রায় ১০ ফুট লম্বা অজগরটিকে তারা কব্জা করে এবং কাঁধে তুলে  নেয়। এভাবেই এক কিলোমিটার রাস্তা অজগরটি কাঁধে নিয়ে উল্লাস করতে করতে  হেঁটে শহর পার হয়। এইভাবে হই হট্টগোল করতে করতে আসা যুবকদের দেখে অনেকেই মনে করেছিলেন কোনও টুর্নামেন্ট জিতে ফিরছেন বুঝি তাঁরা।  কিন্তু কাছে আসতে সকলের চোখ কপালে উঠে যায় , ভয়ঙ্কর এই দৃশ্য দেখে। 


সাপ বিশেষজ্ঞদের দাবি, উল্লাস করতে গিয়ে প্রাণ যেতে পারত।  এমনকি একটু ভুল হলেই সাপ পেঁচিয়ে যেকোনও  ব্যক্তিকে মেরে ফেলতে পারত ! কী করে বন্যপ্রাণী আইন নিজের হাতে তুলে নিল সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন সর্প বিশারদরা।  অবশেষ মরাঘাট রেঞ্জ অফিসে গিয়ে অজগরটি বনকর্মীদের হাতে তুলে দেন গ্রামবাসীরা।