রাজা চট্টোপাধ্যায়, ময়নাগুড়ি : রণক্ষেত্র ময়নাগুড়ি ! দুই নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে পথ অবরোধ। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা। পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাল পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি কী ?
গতকাল সন্ধেয় দুই নাবালিকা টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় দুইজন দুষ্কৃতী তাদের পথ আটকায় এবং নিগ্রহ করার চেষ্টা করে। নাবালিকারা চিৎকার করলে আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে আসে। কিন্তু, দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। এর প্রতিবাদে এদিন দুপুরের পর থেকে সাধারণ মানুষ টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন। বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের কথা তাঁরা শোনেননি। পুলিশ বারংবার তাঁদের জাতীয় সড়ক ছেড়ে দিতে বলে। তাতে অবশ্য কর্ণপাত করেননি স্থানীয়রা। এরপরই পরস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের হটাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয় পুলিশকে। অন্যদিকে, স্থানীয়রা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি ছিল, এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এই দাবিতেই দুপুরের পর থেকে স্থানীয়রা পথ অবরোধ শুরু করেন। এই মুহূর্তে এলাকা থমথমে রয়েছে।
রাজ্যের একের পর এক নিগ্রহ-ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে। দিনকয়েক আগেই মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় নাবালিকা ধর্ষণ-খুনের দু'মাসের মধ্যে সাজা ঘোষণা হয় ২ জনের। দোষী সাব্য়স্ত দীনবন্ধু হালদারকে মৃত্যুদণ্ড এবং শুভজিৎ হালদারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় জঙ্গিপুর আদালত।
১৩ অক্টোবর মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় এক নাবালিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ-খুনের অভিযোগ ওঠে। প্রতিবেশী দীনবন্ধু হালদারের বাড়ি থেকে তার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়দের হাতে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থাতেই দীনবন্ধু হালদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য়ের ভিত্তিতে, গ্রেফতার করা হয় শুভজিৎ হালদার নামে আরেকজনকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তদন্তের জন্য় জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে গঠন করা হয় সিট। ২১ দিনের মাথায় আদালতে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। সাক্ষ্য় গ্রহণ করা হয় ৩১ জনের। বৃহস্পতিবার ধৃত ২ জনকে দোষী সাব্য়স্ত করে জঙ্গিপুর আদালত। গত শুক্রবার সাজা শোনান বিচারক।
সম্প্রতি কুলতলির নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনাতয় ৬২ দিনের মাথায় দোষীকে মৃত্য়ুদণ্ড দেয় আদালত। শুক্রবার মুখ্য়মন্ত্রী সোশাল মিডিয়ায় লেখেন, 'আমি আগেও বলেছি, আমি আবার বলব, প্রতিটি ধর্ষকের কঠোরতম সাজা হওয়া উচিত-মৃত্যুদণ্ড। সমাজে এই জঘন্য অপরাধ দূর করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, দ্রুত বিচার এবং শাস্তি একটি শক্তিশালী প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করবে এবং স্পষ্ট বার্তা দেবে, যে এই ধরনের অপরাধ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। এই কৃতিত্বের জন্য আমি রাজ্য পুলিশ এবং বিচার ব্য়বস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলকে অভিনন্দন জানাই। '