রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: পাচারের আগেই বাজেয়াপ্ত করা হল কয়েক কোটি টাকার সাপের বিষ। জলপাইগুড়িতে সাপের বিষ পাচার করতে গিয়ে বন দফতরের হাতে ধরা পড়ল একজন। উদ্ধার হল প্রায় ১৩ কোটি টাকার সাপের বিষ। গোপন সূত্রে বিষ পাচারের খবর পেয়ে শুক্রবার গরুমারা জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই ব্যক্তিকে পাকড়াও করেন বনকর্মীরা। ধৃত ব্যক্তি দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা। ওই বিষ চিনে পাচারের ছক ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। 


পুলিশ সূত্রে খবর, তিনটি বেলজিয়াম ক্রিস্টাল কাচের জারে সাপের বিষ পাচারের চেষ্টা করছিল এক পাচারকারী। তাকে ধরে ফেলেন গরুমারা বন্যপ্রাণী শাখার কর্মীরা। ধৃত পাচারকারী দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা। চিনে বিষ পাচার করার কথা ছিল ধৃতের। এই বিষ ১৩ কোটি টাকায় বিক্রির ছক ছিল। ধৃতকে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হয়। জলপাইগুড়ি আদালতের সহকারি সরকারি আইনজীবী সিন্ধু রায় জানিয়েছেন, গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের পক্ষ থেকে ধৃতকে ৬ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। ধৃতের আইনজীবী সন্দীপ দত্ত জানিয়েছেন, ধৃতের বিরুদ্ধে সাপের বিষ পাচারের অভিযোগ আছে। তাকে ৬ দিনের হেফাজতে নিয়েছে বনবিভাগ।


জলপাইগুড়িতে চোরাচালান ও পাচারের চেষ্টা নতুন নয়। কিছুদিন আগেই জলপাইগুড়ি জেলার সোনাখালির জঙ্গলে রাতের অন্ধকারে বৃষ্টির মধ্যে পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে কাঠপাচারের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন বন কর্মীরা। বন দফতর সূত্রে দাবি, গভীর রাতে তাঁদের কাছে খবর আসে, মাইচকা নদীর পাড় বরাবর কিছু সন্দেহভাজন লোককে যাতায়াত করতে দেখা যাচ্ছে। এরপরই ধূপগুড়ি থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে রাতে বৃষ্টির মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বনকর্মীরা। তাঁদের দাবি, এক রাউন্ড গুলি চালাতেই এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় কাঠমাফিয়া। দুর্মূল্য শালগাছের প্রায় আশিটি গুঁড়ি উদ্ধার হয়। সেই সঙ্গে বাজেয়াপ্ত হয়েছে লরির চাকার টিউব, পাম্পার ও কুড়ুলের মতো সরঞ্জাম। 


বন দফতর সূত্রে খবর, হাওয়া ভরা টিউবে শাল, সেগুনের গুঁড়ি বেঁধে নদীর উজানে ভাসিয়ে দেয় একদল কাঠপাচারকারী। অন্য পাড়ে তা তোলার জন্য থাকে আরেকটি দল। এভাবেই চলে অরণ্য সম্পদ পাচার।