জয়নগর: ভরসা নেই পুলিশের উপর। মেয়ের মৃত্য়ুতে CBI তদন্ত চাইল জয়নগরে নিহত বালিকার পরিবার। পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ করেনি বলেই মেয়েকে বাঁচানো যায়নি, অভিযোগ তাঁদের। এমনকি সাহায্যের পরিবর্তে পুলিশ পরিবারের লোকজনকে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। আর জি কর কাণ্ডের মতো, তাঁদের ক্ষেত্রেও পুলিশ প্রমাণ লোপাট করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। (Jaynagar Case)


এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে নিহত বালিকার পরিবার জানায়, মেয়েটির বাবা প্রথমে ক্যাম্প পুলিশের কাছে যায়। তারা রিপোর্ট না নিয়ে কুলতলি থানায় যেতে বলা হয়। কুলতলি থানায় গেলে আবার জয়নগর থানায় পাঠানো হয়। পুলিশের তরফে কোনও সহযোগিতা মেলেনি। ক্যাম্প পুলিশ সাহায্য করলেই মেয়েকে জীবিত অবস্থায় ফিরে পাওয়া যেত বলে জানিয়েছেন বালিকার মা। মেয়ের বাবা হাতে-পায়ে ধরলেও পুলিশ সাহায্য় করেনি বলে অভিযোগ তাঁর। (Jaynagar Victim Family)


মেয়েকে ধর্ষণ করেই খুন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত মেয়েটির মা। এত নৃশংস ঘটনার পর পুলিশ কোনও তৎপরতা দেখায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। জানান, সহযোগিতা তো দূর, যাঁরা গিয়েছিলেন আশেপাশের, তাঁদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়। কয়েকজনের মাথাও ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের তদন্তের কোনও রকম বিশ্বাস নেই বলে জানান তিনি। মেয়েটির মা বলেন, "আমরা CBI তদন্ত চাইছি। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বের করে শাস্তি দিক CBI. চরম শাস্তি হোক বা আমাদের হাতে তুলে দিক।"


পুলিশ সক্রিয়তা দেখায়নি বলেই আজ এমন পরিস্থিতি বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। মেয়েটির মা বলেন, "মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে আমরা মহিষমারি ক্য়াম্পে গেলাম যখন, আইনের ভাষা নয়, আমার ভাষায় বলছি, ক্যাম্প থেকে হেঁটে গেলে তিন মিনিট দূরে আমার বাচ্চা পড়তে যায়। ক্যাম্প থেকে তিন মিনিটের রাস্তা। ক্যাম্প থেকে আধা মাইলের মধ্যে নিখোঁজ। তদন্ত পরে, মানবিকতার খাতিরে যদি চারটে পুলিশ পাড়াটা তোলপাড় করত...তখন আমার বাচ্চা বেঁচে ছিল। এই থানা, ওই থানায় পাঠিয়ে হেনস্থা করেছে। ধর্ষণ করে মেরে ফেলার সুযোগ করে দিয়েছে পুলিশকে।"


যেখান থেকে দেহ উদ্ধার হয় মেয়েটির, সেখানে ফরেন্সিক কেন পৌঁছল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তথ্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। নির্যাতিতার মা বলেন, "রাত ২টো-৩টের পর ধরা পড়েছে। সেই সময় মাথার ঠিক ছিল না আমাদের। ব্যারিকেড করা হয়েছে বেলা ১২.৩০টা-১টায় এই তো পুলিশের কর্ম! আর জি করের মতো সব তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওরা। অথচ পাড়ার সকলে জানতে চাইলে মারধর করে পুলিশ, কাউকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে। যেখানে পেরেছে মেরেছে।" 


পুলিশ অভিযোগ নিতে দেরি করেছে যেমন, পুলিশের তরফে গাফিলতির অভিযোগও উঠছে। বালিকার দেহের ময়নাতদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলেন পরিবারের লোকজন। সরকারি হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করাতে চান না নিহত বালিকার বাবা। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সুরতহাল বা ইনকোয়েস্ট হোক, এটাও চায় নিহতের পরিবার। সেই মতো জরুরি ভিত্তিতে শুনানি চেয়ে গতকালই হাইকোর্টে প্রশাসনের তরফে ই-ফাইলিং করা হয়। আজ দুপুর ২টোয় শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।