পার্থ প্রতিম ঘোষ, কল্যাণী: জয়নগরকাণ্ডে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। তবে কল্যাণী এইমসে নয় ময়নাতদন্ত হবে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। সকালেই নিহত বালিকার দেহ কাঁটাপুকুর থেকে নিয়ে যাওয়া হয় কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। সেখানে পৌঁছন এইমসের চিকিৎসকরা।


এদিন সকাল সাড়ে ৯টার পর কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে পৌঁছয় জনগরের নিহত নাবালিকার দেহ। পুলিশ মর্গে তাঁর দেহ রাখা হয়েছে। এখানে ময়নাতদন্ত হবে। জেএনএম হাসপাতালে এসে উপস্থিত হয়েছেন কল্যাণী এইমসের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা। উপস্থিত রয়েছেন বারুইপুরের এসিজেএম। গতকাল জয়নগর-কাণ্ডে এসিজেএম-এর উপস্থিতিতে কল্যাণী এইমসে ময়নাতদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। বিচারপতি নির্দেশ দেন, কল্যাণী এইমসে পরিকাঠামো না থাকলে জেএনএম হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করবেন কল্যাণী এইমসের চিকিৎসকরা। জেএনএম হাসপাতালের কোনও চিকিৎসক বা কর্মী ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এরপর কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়। প্রথম থেকেই সরকারি হাসপাতালে ময়নাতদন্ত চায়নি নাবালিকার পরিবার। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের দাবি জানান তাঁরা। এরপরেই কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি।


গতকাল বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশ। এই ঘটনায় কেন 'পকসো' ধারা যুক্ত করা হয়নি? সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সুরতহাল রিপোর্টে অনুযায়ী পকসো ধারা যুক্ত করার সংস্থান রয়েছে। পকসোর ৮ নম্বর ধারা যুক্ত না করলেও ৬ নম্বর ধারা করুন। নিহত বালিকার পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন কোনও হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হোক। সেইমতো, শনিবারই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় পুলিশ। রবিবার, বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের কাছে অ্যাডভোকেট জেনারেল সওয়াল করেন, রাজ্যের ময়নাতদন্তের পরিকাঠামো রয়েছে। কিন্তু পরিবারের দাবি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ময়নাতদন্তের জন্য নিম্ন আদালতে আবেদন জানালেও তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। তখন বিচারপতি জানতে চান, সুরতহাল থেকে কি প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ পাওয়া গেছে? কারণ এখানে পকসোর কোনও ধারা পাওয়া যাচ্ছে না। 


অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, ইতিমধ্যেই ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ অর্থাৎ খুন ও ২৩৮ নম্বর ধারা অর্থাৎ প্রমাণ নষ্ট করার ধারা যুক্ত করা হয়েছে। ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে সেই ধারা যুক্ত করা হবে।  শনিবারই যে কথা বলেছিলেন বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার। বিচারপতি ঘোষ তখন বলেন, অভিযুক্তকে ACJM-এর সামনে পেশ করবেন না। পকসো আদালতে পেশ করুন। কমান্ড হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, পরিকাঠামোগত অসুবিধার কারণে তাদের হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা সম্ভব নয়। কারণ, তাঁদের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ নেই। বিচারপতি বলেন, পকসোর ৮ নম্বর ধারা যুক্ত না করুন, ৬ নম্বর ধারা যুক্ত করুন। আমি যা বলেছি সেটা আমার অসন্তোষের কারণে বলেছি।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।  


আরও পড়ুন: RG Kar Protest: ফের কণ্ঠরোধের চেষ্টা! 'জাস্টিস স্লোগানে বন্ধ' অনুষ্ঠান