কলকাতা: অবশেষে বিহারের কুখ্যাত গ্যাংস্টার সুবোধ সিংহকে নাগালে পেল সিআইডি। বিহারের জেল থেকে আসানসোলে নিয়ে আসা হল গ্যাংস্টার সুবোধ সিংকে। কড়া নিরাপত্তায়, রীতিমতো গোপনীয়তা বজায় রেখে, বিহারের এসটিএফ ও সিআইডির ঘেরাটোপে আসানসোল আদালতে নিয়ে আসা হয় এরাজ্যে একের পর এক ডাকাতির মাস্টারমাইন্ডকে। বিহারের জেলে বসে বাংলায় অপারেশন চালানোর জন্য একাই একশো ছিল এই সুবোধই। 



বিহারের জেলে বসে বাংলায় দুষ্কৃতী কার্যকলাপের নিখুঁত অপারেশনের অভিযোগ। আর সেই গ্যাংস্টারকে নাগালে পেতে এবার CID-র 'অপারেশন সুবোধ'। কড়া নিরাপত্তায় বিহারের বেউর জেল থেকে, আসানসোলে নিয়ে আসা হল কুখ্যাত দুষ্কৃতী সুবোধ সিং-কে। রাজ্যের গোয়েন্দাদের দাবি, নিজে বিহারের জেলে থাকলেও, সেখানে বসে বাংলায় ডাকাতি, ব্যবসায়ীর ওপর হামলা, প্রোটেকশন মানি চেয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে হুমকি-সহ একাধিক ঘটনার মাস্টারমাইন্ড এই সুবোধ সিংই। 
 
২০২২ সালে রানিগঞ্জে স্বর্ণব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলার ঘটনার নেপথ্যে ছিল সুবোধ সিং। ২০২০-তে ব্যারাকপুরে বিজেপি কাউন্সিলর মণীশ শুক্লা খুনেও নাম জড়ায় সুবোধের। 


সম্প্রতি বেলঘরিয়ার রথতলায় BT রোডে ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়িতে গুলিবৃষ্টি, ও ব্যারাকপুরের রেস্তোরাঁ ব্য়বসায়ী তাপস ভকতকে হুমকির ঘটনাতেও নাম সামনে আসে সুবোধ সিংয়ের। আর এই সবটাই নিয়ন্ত্রণ হয়েছে ৫৮৮ কিলোমিটার দূরে বিহারের বেউর জেল থেকে। 


রাজ্য গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বিহারের সুবোধ সিং কুখ্যাত সোনা পাচারকারী। গ্যাংস্টার মহলে 'জুয়েল থিফ' নামেও পরিচিতি রয়েছে তাঁর। ইতিমধ্যেই ৩০০ কোটি টাকার সোনা লুঠ করেছে সুবোধের গ্যাং। বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গে ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর সাগরেদরা। 


আরও পড়ুন, আইনকে বুড়ো আঙুল, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে সালিশি সভায় তরুণ-তরুণীকে মারধর


২০১৮ সাল থেকে জেলবন্দি সুবোধ জেলে বসেই তৈরি করত এই সমস্ত অপারেশনের ব্লুপ্রিন্ট। বেউর জেল ছিল কার্যত গ্যাংস্টার সুবোধের ডেরা। শুধু নিজের গ্যাং পরিচালনা করাই নয়, বিহারের জেলে বসে অন্যান্য দুষ্কৃতী গ্যাংকেও 'সাপোর্ট' দিত সুবোধ। অপেক্ষাকৃত ছোট দুষ্কৃতী গ্যাং-এ 'ম্যানপাওয়ার' কম পড়লে, শুটার সাপ্লাইও দিত সে। 


রাজ্যের গোয়েন্দা সূত্রে আরও দাবি, এরাজ্যে একাধিক ডাকাতির ঘটনায় ধৃতদেরকে জেরা করে কোনও না কোনওভাবে সবক্ষেত্রেই উঠে আসে সুবোধের নাম। কিন্তু সুবোধ এতটাই প্রভাবশালী যে, এর আগেও একাধিকবার চেষ্টা করে তাঁকে এরাজ্যে আনা যায়নি। নিজের প্রভাব ঘাটিয়ে বিহারের জেলেই থেকে যায় বড় বড় ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড। 


শনিবার পাটনায় পৌঁছয় সিআইডির স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ। রবিবার ভোরে বিহার পুলিশের এসটিএফ ও সিআইডি আধিকারিকদের ঘেরাটোপে, অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে এরাজ্যে নিয়ে আসা হয় সুবোধ সিংকে।  আসানসোল আদালতে তোলা হলে তাঁকে ১ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে