সন্দীপ সমাদ্দার, ঝালদা : ঝালদা পুরসভা (Jhalda Municipality) ঘিরে ফের অনাস্থার মেঘ। পুরপ্রধান-সহ ৫ কাউন্সিলর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরেও, কাটেনি অনাস্থা সমস্যা। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কাউন্সিলরদের অন্ধকারে রেখে পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। বোর্ড মিটিং (Board Meeting) না করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। একথা শুধু কংগ্রেস নয়, তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলররাও বলছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা ঝালদা পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসারকে চিঠি করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের দাবি, সংখ্যালঘু বোর্ড চলছে ঝালদা পুরসভায়। তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশের অভিযোগ, ৮ মাস সাধারণ সভা ডাকা হয়নি পুরসভার। পুরপ্রধান স্পেশাল মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যদিও পুরপ্রধানের দাবি, তৃণমূল কাউন্সিলররা যে অভিযোগ জানিয়েছেন তা অনুচিত। দলীয় কাউন্সিলররা কোনও প্রশ্ন থাকলে দলের মধ্যেই করতে পারতেন, প্রতিক্রিয়া শীলা চট্টোপাধ্য়ায়ের।
ঝালদা পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর বিপ্লব কয়াল বলেন, "আজ ঝালদা পুরসভার পৌর দফতরে আমরা একটা চিঠি জমা করেছি। যেখানে আমরা বলেছি, জেনারেল মিটিং করা দরকার, সেটা করার পর যা করার সেটা করুন। অতি সত্ত্বর জেনারেল মিটিং ডাকতে বলেছি। এটা সাত জন কাউন্সিলর...তৃণমূল বা কংগ্রেসের ব্যাপার নয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কংগ্রেস সবসময় আছে। কংগ্রেস বুঝতে পেরেছে, ঝালদা পুরসভায় দুর্নীতির গন্ধ আসছে। তাই, এখানে সরব হয়েছে।"
পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর সুদীপ কর্মকার বলছেন, "অনেক পেমেন্ট আছে, কিছু কাজের ব্যাপার আছে। সামনে পুজো আসছে। লাইটের ব্যাপার আছে। পারচেজিং অনেক কিছু আছে। আমরা লিখিত দিয়েছিলাম, সরকারি গাইডলাইন মেনে যেন ব্যয় করা হয়।"
যদিও ঝালদার পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, "কাউন্সিলররা ভুল করছেন। দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করাটা উচিত নয়। কিন্তু, তবুও ওঁরা কেন করছেন তা খতিয়ে দেখব, আলোচনা করব। তাঁরা হয়তো চাইছেন যে, তৃণমূলের মধ্যে শুধু ওঁরাই থাকুক। আর কেউ যোগ দিতে না পারেন। তাহলে দল কী করে বাড়বে ? রাজনৈতিক দল এভাবে হয় না। আমি প্রতিটি ব্যাপার কাউন্সিলরদের চিঠি করে জানাই। আমরা জেনারেল মিটিং একটা করেছি। আরও করব।"
গত পুরভোটে ঝালদার ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে কংগ্রেস ও তৃণমূল, দু পক্ষই ৫টি করে আসনে জয়ী হয়। নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হন ২টি আসনে। ৬ সেপ্টেম্বর, চেয়ারপার্সন-সহ ঝালদা পুরসভার ৩ কংগ্রেস ও ২ নির্দল কাউন্সিলরকে দলে টেনে কংগ্রেসের পুরবোর্ডই ফেলে দেয় তৃণমূল! এই নিয়ে উত্তাল হয় রাজ্য-রাজনীতি। এই দলবদলের ফলে ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেসের কাউন্সিলর সংখ্যা কমে হয় ২। আর তৃণমূলের আসন সংখ্য়া ৫ থেকে বেড়ে হয় ১০।